কত ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছেন। শান্ত স্বভাবের হয়েও বিতর্কেরও সঙ্গী থেকেছেন। তাঁর নিজের গায়ে কেউ কালি ছেঁটাতে পারেনি বটে, তবে 'মৌন প্রধানমন্ত্রী' হিসেবে কটাক্ষও সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। এহেন মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য আজ সম্পন্ন হল দিল্লিতে। আজ তাঁর স্মৃতিসৌধ নিয়ে বিতর্কের আবহেই কংগ্রেসের সদর দফতর থেকে নিগমবোধ ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয় মনমোহন সিংয়েহ দেহ। সেনার ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। এরপর পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আজ তাঁর শেষকৃ্ত্য সম্পন্ন হয়। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, রাজনাথ সিং, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা। এছাড়াও সেখানে ছিলেন মনমোহনের পরিবারের সদস্যরা। (আরও পড়ুন: সিএ ফাইনালে টপার তালিকায় তৃতীয় স্থানে কলকাতার কিঞ্জল, এবারে পাশ করলেন কতজন?)
আরও পড়ুন: 'বাবার বেলায়…', মনমোহনের প্রয়াণের পর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক প্রণব কন্যা
আরও পড়ুন: 'সরকার ডিএ দেবে না…', সামনে বিস্ফোরক দাবি, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্টে বলা…
উল্লেখ্য, এর আগে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের স্মৃতিসৌধের জন্য জায়গা চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। কংগ্রেসের দাবি ছিল, এমন এক স্থানে মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হোক যেখানে তাঁর সম্মানে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা যাবে। এই নিয়ে 'রাজনীতি করার' অভিযোগও ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কংগ্রেস এবং মনমোহন সিংয়ের দাবি মেনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিসৌধের জন্যে জমি দেওয়া হবে। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে পিআইবি-র মাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে শিরোমণি অকালি দলের নেতা সুখবীর সিংহ বাদল সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দাবি করেন, মনমোহন সিংহের স্মৃতিসৌধের জন্য জায়গা চেয়েছিল কংগ্রেস এবং তাঁর পরিবার। সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে কেন্দ্রীয় সরকার। (আরও পড়ুন: কলকাতা থেকে চালু নয়া আন্তর্জাতিক রুটের উড়ান, জানুন টাইমিং ও ভাড়ার বিশদ)
তবে পিআইবি-র প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, 'প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের জন্যে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করতে জমি বরাদ্দের আবেদন জানিয়ে ২৭ ডিসেম্বর সকালে একটি চিঠি দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। সকালে বিশেষ ক্যাবিনেট বৈঠকের পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কংগ্রেস সভাপতি এবং পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে স্মৃতিসৌধের জন্যে জমি দেওয়া হবে। এর মাঝে শেষকৃত্য এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হতে পারে। কারণ জমি বরাদ্দ করতে এবং স্মৃতিসৌধ তৈরির ক্ষেত্রে একটি ট্রাস্ট গঠন করতে হবে।' (আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে কি বকেয়া ডিএ মামলার শুনানি ফের পিছিয়ে যাবে? সামনে এল বড় আপডেট)
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৮টা ১০ মিনিটে মনমোহন সিংকে এইমসের ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর রাত ৯টা ৫১ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপরই কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয়, ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকপালন করা হবে। প্রসঙ্গত, দেশের ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। এককালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরও ছিলেন তিনি। শিক্ষাবিদ হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। ইউজিসি চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী হওয়ার আগে। পরবর্তীতে দেশের শীর্ষ নেতা হয়েছিলেন মনমোহন সিং।