ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধের মহড়া দেবে ফরাসী নৌবাহিনী। জানা গিয়েছে, পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী জাহাজ এফএনএস চার্লস ডি গল-সহ একটি ফরাসী নৌবাহিনীর 'ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ', যেটি বর্তমানে ভারত মহাসাগরে মোতায়েন হয়ে রয়েছে, সেটিই এই অঞ্চলের সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করতে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে বরুণ নৌ-মহড়ায় অংশ নেবে।
ফরাসী নৌবাহিনীর মিশন ক্লেমেনসো ২৫-এর অংশ হিসাবে এই 'ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ'টিকে ভারত মহাসাগরে মোতায়েন করা হয়েছে। যার প্রধান লক্ষ্য হল, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা এবং এই অঞ্চলে ইউরোপীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা।
শুক্রবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ফরাসী দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের অংশ হিসাবে ফরাসী নৌবাহিনী এই এলাকার 'আঞ্চলিক অংশীদার এবং মিত্রশক্তিদের সঙ্গে, বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে' যৌথ প্রশিক্ষণ ও মহড়া চালাচ্ছে।
ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, মিশন ক্লেমেনসো ২৫-এর অংশ হিসাবে, ফরাসী ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ এবং ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ ৪২তম বার্ষিক বরুণ দ্বিপাক্ষিক মহড়ায় অংশগ্রহণ করবে।
ফরাসী দূতাবাসের বক্তব্য, 'এই বিমান-নৌ-প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হল, আমাদের দুই দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক (সেনা প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার) ব্যবহার আরও বাড়ানো এবং একটি জোটের অংশ হিসাবে বহু মাইল এলাকাজুড়ে যেকোনও বিপদ (আকাশ পথে, জলপথে এবং সমুদ্রের গভীরে) মোকাবিলা করার জন্য নাবিকদের প্রস্তুত করা। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ হিসাবে, ফ্রান্স ও ভারত এই অঞ্চলের সামুদ্রিক নিরাপত্তায় নিজেদের অবদান অব্যাহত রাখতে নিয়মিত পরস্পরকে সহযোগিতা করে।'
এই মহড়া গোষ্ঠীর অধীনে রয়েছে একটি বিমান বহর এবং একাধিক এসকর্ট বা পণ্যবাহী জাহাজ। যেগুলিকে বলা হয়, ফ্রিগেট বা পণ্য সরবরাহকারী জলযান। আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই মহড়া চলাকালীন সেগুলি গোয়া এবং কোচিতে কিছু সময়ের জন্য থামবে।
এই মহড়ায় অংশগ্রহণকারী ৪২,৫০০ টন ওজনের বিমানবাহী রণতরী এফএনএস চার্লস ডি গল রাফাল এম যুদ্ধবিমান-সহ একাধিক বিমান ও হেলিকপ্টার বহন করতে সক্ষম।
ভারতে মহড়া শেষ করার পর এই ফরাসী নৌবহর যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরে যাবে এবং সেখানে পরবর্তী মহড়াগুলিতে অংশ নেবে।
ফরাসি নৌবাহিনী মূলত দু'টি কারণে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় বিশেষভাবে মনোনিবেশ করেছে। এগুলি হল - সংশ্লিষ্ট দ্বীপ অঞ্চলে প্রায় ১৫ লক্ষ ফরাসী নাগরিকের উপস্থিতি এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক গুরুত্ব। কারণ, এখানকার প্রায় ৯৩ শতাংশ এলাকাজুড়েই রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল।