নিম্নমানের ফুচকা ও কফি - না জেনে সেসবই খাচ্ছেন ক্রেতারা! হিমাচলপ্রদেশের উনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হওয়া নানা ধরনের খাবার ও পানীয় দ্রব্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার পর সামনে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ফুচকা বা স্থানীয় ভাষায় যাকে বলে গোলগাপ্পা, তার সঙ্গে যে টক জল দেওয়া হয়, কিংবা বাহারি কাগজের কাপে যে কফি ক্রেতাদের দেওয়া হয়, এমনকী বিভিন্ন ধরনের খাবার ভাজার জন্য যে সরষের তেল ব্যবহার করা হয়, সেসবের প্রত্যেকটির নমুনাই মানদণ্ড রক্ষার পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি।
তথ্য বলছে, সব মিলিয়ে মোট ১৭টি খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। উনা শহরের বিভিন্ন দোকান এবং ঠেলাগাড়ি থেকে এই নমুনাগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল। এরপর সেগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সোলান জেলার কান্দাঘাটের গবেষণাগারে।
সেই পরীক্ষার ফলাফল বলছে, ফুচকা বা গোলগাপ্পায় নানা ধরনের ক্ষতিকর রং ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই রং ফুচকার জলেও মেশোনা হয়েছে। যা একেবারেই নিষিদ্ধ।
প্রসঙ্গত, এর আগে হামিপুর জেলার দেওথসিধে অবস্থিত বাবা বালকনাথ মন্দিরের তরফে প্রসাদ হিসাবে যে খাবার বিক্রি করা হয়, তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই নমুনা পরীক্ষার ফলও ছিল মারাত্মক।
মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, ওই নমুনা মোটেও স্বাস্থ্যকর বা খাওয়ার জন্য নিরাপদ নয়। এরপর বুধবারই প্রসাদ বিক্রির সেই দোকান বন্ধ করে দেয় মন্দির কর্তৃপক্ষ। যদিও তারা জানিয়েছে, শীঘ্রই সেই দোকান খোলার বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।
ইতিমধ্যেই আরও ১৭টি খাবারের নমুনার রিপোর্ট সামনে এল। যার মধ্যে দু'টি নমুনা নির্ধারিত মানদণ্ড পার করতে ব্যর্থ হয়েছে। এবং একটি নমুনার ক্ষেত্রে 'জাল ব্র্যান্ডিং' করার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
বুধবার সংশ্লিষ্ট 'ফুড স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড সেফটি উইং'-এর অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর জগদীশ ধীমান এই প্রসঙ্গে জানান, 'এই বিষয়ে যা যা পদক্ষেপ করা দরকার, তা করা হচ্ছে।'
প্রসঙ্গত, ভারতের সর্বত্রই ফুচকা বা গোলগাপ্পা বা পানিপুরি অত্যন্ত জনপ্রিয়। হিমাচলপ্রদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু, সেখানে ফুচকার সঙ্গে পরিবেশিত টক বা মিষ্টি জলে যেসমস্ত মশলা ব্যবহার করা হচ্ছে, তার গুণমান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট বলছে, সেইসব মশলা একেবারেই নিম্নমানের এবং তাতে ক্ষতিকর রং পর্যন্ত মেশানো হয়েছে।
এছাড়াও, পরীক্ষকরা বিভিন্ন দোকান থেকে রান্নার কাজে ব্যবহার করা সরষের তেলের নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ওই তেলের 'জাল ব্র্যান্ডিং' করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই এলাকায় বিভিন্ন দোকানে যে ইনস্ট্যান্ট কফি বিক্রি করা হয়, তাও অত্যন্ত নিম্নমানের।
সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে এই ধরনের বেআইনি কাজ করার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না। সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বাজারে, দোকানে যাতে নিম্নমানের কোনও খাবার বিক্রি করা না হয়, তা নিশ্চিত করতেই রাজ্য সরকারের তরফে স্বাস্থ্য দফতরকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার জেরেই 'মাঠে নেমে' তদারকি শুরু করেছেন সরকারি আধিকারিকরা। সমস্ত আইনভঙ্গকারী ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছেন তাঁরা।