আগামী ৬ মাসের মধ্যে নিজের কোম্পানি বেঙ্গালুরু থেকে তুলে পুনেতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এক টেক সংস্থার কর্ণধার। কারণ, ভাষা বিদ্বেষ। কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে ভাষা বিতর্ক বহু দিন ধরেই চলছে। রাজ্যে অ-কন্নড়ভাষীদের হেনস্থার শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ। এই বিতর্কের মধ্যেই ঘৃতাহুতি দেয় সম্প্রতি চাঁদপুরার এসবিআই-এর সূর্যনগর শাখায় ঘটনা ঘটে।আর এরপরেই নিজের সংস্থার কর্মীদের জন্য বড় সিদ্ধান্ত নেন কৌশিক মুখার্জি নামে ওই টেক প্রতিষ্ঠাতা।
কৌশিক মুখার্জি জানিয়েছেন, তাঁর সংস্থার অনেক কর্মীই কন্নড় ভাষা জানেন না। আর সেই জন্য অ-কন্নড় কর্মীদের তিনি ভাষা বিদ্বেষের শিকার হতে দিতে চান না। তাই তাঁর পুরো কোম্পানি-ই বেঙ্গালুরু থেকে তুলে পুনেতে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। এক্স বার্তায় তিনি বলেন, 'এই ভাবনাটি আমার সংস্থার কর্মীরা নিজেরাই উত্থাপন করেন। সরাসরি আমার টিম থেকেই এই পদক্ষেপ আসে। আমি তাদের পয়েন্ট অফ ভিউতে সম্মত হয়েছি। যদি এই ভাষাগত এই অর্থহীনতা চলতে থাকে, তাহলে আমি কখনওই চাই না যে আমার অ-কন্নড় কর্মীরা ভাষা বিদ্বেষের পরবর্তী 'শিকার' হোক। তাই আগামী ৬ মাসের মধ্যে বেঙ্গালুরুর অফিস গুটিয়ে পুনেতে চলে যাব।' ইতিমধ্যে কৌশিক মুখার্জির এই পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেইসঙ্গে ভাষা বিতর্কে যোগ করেছে নতুন মাত্রা।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই বেঙ্গালুরুর চাঁদপুরার এসবিআই-এর সূর্যনগর শাখায় একটি ঘটনা ঘটে। যেখানে ম্যানেজার কন্নড় ভাষায় কথা বলতে অস্বীকার করেন। ম্যানেজার কন্নড় ভাষায় কথা না বলায় হেনস্থার শিকার হন। তারপরই কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ওই ম্যানেজারের আচরণের নিন্দা করে নির্দেশ দেন, রাজ্যের সমস্ত ব্যাঙ্ক কর্মীকে কন্নড় ভাষা জানতে হবে। পাশাপাশি ওই এসবিআই ম্যানেজারকে বদিলও করে দেওয়া হয়। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানান, ওই ব্যাঙ্ককর্মী যে আচরণ করেছেন, তা চরম নিন্দনীয়। স্থানীয় ভাষার প্রতি সম্মান প্রদানের অর্থ হল মানুষকে শ্রদ্ধা করা। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, প্রত্যেক ব্যাঙ্ককর্মীর গ্রাহকদের সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলা উচিত। আর স্থানীয় ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করা উচিত।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে তামিলনাড়ু। জাতীয় শিক্ষানীতি সে রাজ্যে গ্রহণ করা হয়নি।এরমধ্যেই মহারাষ্ট্রে প্রাথমিক শিক্ষায় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে হিন্দি শেখা। সেক্ষেত্রেও আগ্রাসনের অভিযোগ উঠেছে। এবার কর্ণাটকেও জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাও আবার এক দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যে।