তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাধারণ হেডফোন বা ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। আর এখানেই লুকিয়ে রয়েছে বিপদ। এর ফলে তরুণদের শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে অল্প বয়সেই। আবার আরও গুরুতর সমস্যা হতে পারে। এই অবস্থায় দিনে কতক্ষণ হেডফোন ব্যবহার করা উচিত অথবা হেডফোনে শব্দের মাত্রা কত হওয়া উচিত? সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই পরামর্শ সব রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সারাক্ষন হেডফোনে গান শোনেন? এটাই আপনার সর্বক্ষণের সঙ্গী? তাহলে এখনই সতর্ক হন!
মন্ত্রকের পরামর্শে জানানো হয়েছে, লাগাতার হেডফোন ব্যবহার করলে সে ক্ষেত্রে শ্রবণ ক্ষমতা কমতে পারে। এমনকী টিনাইটাস বা কানে সব সময় ভোঁ ভোঁ আওয়াজ শোনার মতো সমস্যা দেখা দেয়। বয়স পঁচিশ বছর পেরোনোর আগেই শ্রবণশক্তি মারাত্মক ভাবে কমে যাচ্ছে বহু তরুণের। পরামর্শে বলা হয়েছে উচ্চস্বরে এবং দীর্ঘক্ষণ হেডফোন ব্যবহার করলে কানের আরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। যা হিয়ারিং এইড বা ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট (অন্তঃকর্ণ প্রতিস্থাপন) করেও ঠিক করা যায় না। সেই কারণে তরুণ প্রজন্মের এই মারাত্মক ক্ষতি রোধ করতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে এই পরামর্শ জারি করা হয়েছে। এই সমস্যা প্রতিরোধে পরামর্শে বলা হয়েছে, দিনে ২ ঘণ্টার বেশি হেডফোন বা ব্লু-টুথ ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ১১ দফা সুপারিশের বলা হয়েছে, এই যন্ত্রের শব্দের মাত্রা কোনওভাবেই ৫০ ডেসিবেলের বেশি করা যাবে না।
এবিষয়ে ইএনটির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বক্তব্য, বর্তমানে হাসপাতালগুলিতে কানের অসুখের সমস্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণ বয়স ষাটের কাছাকাছি চলে গেলে আগে টিনাইটাসের সমস্যা দেখা যেত। এখন তরুণদের মধ্যে এই সমস্যা বাড়ছে। চিকিৎসকদের বক্তব্য, ৮০ থেকে ৯০ ডেসিবেল শব্দ যদি দিনের পর দিন ৭-৮ ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে তাহলে শ্রবণক্ষমতা হারানোর সম্ভাবনা থাকে। প্রথমে কানে সবসময় ভোঁ ভোঁ আওয়াজ শোনা যায়। আর তারপরই বড় বিপদ হতে পারে। এরকম সমস্যা হলেই দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। পরামর্শে বলা হয়েছে, শব্দের মাত্রা কোনওভাবেই যেন ১০০ ডেসিবেলের বেশি না হয়। এর পাশাপাশি শিশুদের মোবাইল বা টিভি-ল্যাপটপ দেখার সময় কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শব্দ বাড়িয়ে অনলাইন গেম খেলা কমানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।