পশ্চিমবঙ্গ–সহ পাঁচ রাজ্যে যখন বিধানসভা নির্বাচন চলছে তখন ত্রিপুরায় স্বশাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়ে গেল বিজেপি। সেখানে অবশ্য ডবল ইঞ্জিন সরকার। বিকাশ ঘটেছে সেখানে বলে বারবার দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। এখন দেখা যাচ্ছে পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশের পর বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন ত্রিপুরার সাধারণ মানুষ। এই খবর চাউর হতেই তা বাংলার পরবর্তী চার দফার বিধানসভা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পাঞ্জাবের পুরভোটে গো–হারা হেরেছে বিজেপি। হিমাচল প্রদেশের কুর্সিতে বিজেপি। বুধবার পুরভোটে ভরাডুবি হয় গেরুয়া শিবিরের। এবার মোদী–শাহদের বিজয় রথের চাকা থমকে গেল নিজেদের শাসনে থাকা ত্রিপুরায়। রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত স্বশাসিত জেলা পরিষদ (টিএডিএস) নির্বাচনে বিজেপিকে প্রত্যাখান করেছেন সাধারণ মানুষ। রাত পর্যন্ত খবর, ২৮টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে এগিয়ে টিআইপিআরএ জোট। বাংলার ভোট চলাকালীন তিন রাজ্যের ফলাফল মোদী–শাহদের জোর ধাক্কা দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। কারণ, বিজেপির হারের ধারাবাহিকতাকে সামনে এনে জোরদার প্রচার চালাচ্ছে মূল প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেস।ত্রিপুরায় কংগ্রেসের একসময় দাপুটে নেতা ছিলেন রাজা প্রদ্যুৎ মাণিক্য দেববর্মন। দায়িত্ব সামলেছিলেন প্রদেশ সভাপতির পদও। নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে দলের সঙ্গে মন কষাকষির জেরে তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন। তারপর গড়ে তোলেন তিপ্রা মথা নামে একটি রাজনৈতিক দল। আইএনপিটি’কে সঙ্গে নিয়ে টিএডিএস নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন প্রদ্যুৎ। ত্রিপুরায় এটাকেই বলা হচ্ছে টিআইপিআরএ জোট।রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত ২০টি বিধানসভা কেন্দ্রে কাউন্সিলের সংখ্যা ৩০টি। নির্বাচন হয়ে থাকে ২৮টিতে। বাকি দু’টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন করে থাকেন রাজ্যপাল। শনিবার কাউন্সিল ভোটের ফলাফলে জোটেরই জয়জয়কার। ১৮টি কাউন্সিলে এগিয়ে জোট। মাত্র সাতটিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ফলে জোটের জয় স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। ত্রিপুরার রাজনীতিতে গেরুয়া শিবিরের এই পরাজয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, কাউন্সিলের ভোট-ফলাফলের গতিপ্রকৃতি থেকে বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক শক্তির আঁচ পাওয়া যায়। শেষবার কাউন্সিলের নির্বাচন হয়েছিল ২০১৫ সালের মে মাসে। ২০২০ সালের মে মাসে কাউন্সিলের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন কাউন্সিলে রাজ্যপালের শাসন জারি রয়েছে। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ২৫টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট।