১৯৫১ সাল। তখন বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর। টফির প্রলোভন দেখিয়ে, কিডন্যাপ করা হয়েছিল ছোট্ট ছেলেটিকে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়েস্ট ওকল্যান্ডের একটি পার্ক থেকে নিখোঁজ হয় লুইস আরমান্ডো অ্যালবিনো নামে এই শিশু। এখন, ৭৩ বছর পেরিয়ে, খোঁজ মিলল তাঁর।
মারকিউরি নিউজ প্রথম এই খবরটি সামনে আনে। জানা গিয়েছে, ১৯৫১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, অপহরণ করা হয়েছিল অ্যালবিনোকে। এখন তাঁর বয়স ৭৯ বছর। পুয়ের্তো রিকানে জন্ম হয় তাঁর। পরিবারে, পাঁচ ভাইবোনের একজন।
আরও পড়ুন: (Minor rape: নাবালিকাকে গণধর্ষণ উত্তরপ্রদেশে, আটক ৭ ও ৮ বছরের দুই নাবালক, অসুস্থ নির্যাতিতা)
১০ বছর বয়সী ভাই রজারের সঙ্গে খেলার সময় কিডন্যাপ করা হয়েছিল অ্যালবিনোকে। এসময় পার্কে এক মহিলা এসে তাঁকে টফি দেওয়ার অজুহাতে সঙ্গে নিয়ে যান। পরে, তাঁকে নিউইয়র্কের এক দম্পতি দত্তক নেন। পুলিশ, কোস্টগার্ড ও সেনা সদস্যরা তার খোঁজে গোটা এলাকায় তল্লাশি চালায়। এফবিআইকেও ডাকা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, দুর্ভাগ্যবশত, সাত দশক ধরে তাঁর খোঁজ মেলেনি।
মা ছেলের ফেরার পথ চেয়েছিলেন
ছেলে এতদিন ধরে নিখোঁজ থাকা সত্ত্বেও, অ্যালবিনোর মা কখনও আশা হারাননি। তিনি সবসময় আশা করতেন যে তাঁর ছেলে ফিরে আসবে। এরপর ২০০৫ সালে মারা যান তিনি। কিন্তু অ্যালবিনোর ৬৩ বছর বয়সী ভাইজি, আলিদা অ্যালেকুইন, হাল ছাড়েননি। তাঁর দীর্ঘদিনের হারানো কাকাকে খোঁজার প্রচেষ্টা করে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: (ধর্ষণের হাত থেকে ৬ বছরের শিশুকে বাঁচাল বাঁদরের দল, ঘটনাস্থল থেকে চম্পট আগন্তুক)
আলিদা আইনি সাহায্য নিয়েছিলেন। ২০২০ সালে তাঁর অনুসন্ধান শুরু হয়েছিল। একটি অনলাইন ডিএনএ টেস্টে, অ্যালবিনো নামে একজনের সঙ্গে প্রচুর মিল খুঁজে পান তিনি। মনে আশা জেগেছিল যে এই অ্যালবিনো তাঁর নিজেরই কাকা হতে পারেন। এরপর তিনি মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে, পুরনো সংবাদপত্র এবং লাইব্রেরির রেকর্ড ঘেঁটে, অবশেষে লুইস অ্যালবিনোর ছবি খুঁজে পান। যা প্রমাণ করে যে তাঁর অনুমান সঠিক ছিল। এই অ্যালবিনোই আসলে আলিদার দীর্ঘদিনের হারিয়ে যাওয়া কাকা।
এরপর অ্যালবিনোর সঙ্গে, তাঁর বড় ভাই রজারের পুনরায় দেখা হয়। কিন্তু এই সংযোগ বেশি দিনের ছিল না। ৮২ বছর বয়সী রজার গত মাসে ক্যানসারে মারা যান। যদিও, আলিদার দাবি জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো আনন্দে কাটিয়েছেন রজার। হারানো ভাইকে খুঁজে পেয়ে খুশি ছিলেন তিনি। এফবিআই জানিয়েছে, অপহরণ মামলাটি এখনও তদন্তাধীন। লুইস আরমান্ডো অ্যালবিনো এখন একজন অবসরপ্রাপ্ত দমকল কর্মী বা ফায়ার ফাইটার।