ড. মনমোহন সিংয়ের প্রয়াণের পরদিনই তাঁকে মরণোত্তর ভারত রত্ন প্রদানের দাবি তুলল অরবিন্দ কেজরিওয়েলের আম আদমি পার্টি।
তাদের এই দাবি স্বাভাবিকভাবেই সব মহলের নজর কেড়েছে। কারণ, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের সঙ্গে কার্যত সম্মুখ সমর শুরু হয়েছে আপ-এর। এমনকী, বৃহস্পতিবারই তারা জানিয়েছিল, প্রয়োজনে কংগ্রেসকে INDIA থেকে বহিষ্কার করতে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করবে তারা!
সেই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার আপ-এর রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেন, 'ভারত রত্ন পাওয়ার জন্য যে যে যোগ্যতা থাকা দরকার, তার সবক'টিই তাঁর (মনমোহন সিং) মধ্য়ে ছিল। ভারত সরকারের অবশ্যই এই বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করা উচিত।'
এরপরই ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিজের স্মৃতি ভাগ করে নেন সঞ্জয়। রীতিমতো আবেগঘন গলায় বলেন, 'আমি যেদিন থেকে রাজ্যসভায় গিয়েছি, তখন থেকেই তাঁর আশীর্বাদ পেয়েছি। আমি একটি ঘটনার কথা বলতে পারি, যা আমি কোনও দিন ভুলব না।...'
'...আমি তখন গান গাইছিলাম, তখন কোনও ডিজিট্যাল সিগনেচার করার বিষয় ছিল না। আমি হঠাৎ খেয়াল করলাম, কেউ একজন পিছন থেকে আমার কাঁধে হাত রাখলেন। আমি পিছন ফিরে দেখি, ড. মনমোহন সিং দাঁড়িয়ে ছিলেন।...'
'আমি ওঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম করলাম। তিনি আবার আমার কাঁধে হাত রাখলেন এবং বললেন, 'সঞ্জয় সিংজি আপনি বিরোধীদের তরফে একটি দৃঢ় কণ্ঠ...!' আমি এই কথাগুলো চিরকাল মনে রাখব। তিনি একজন মহান মানুষ ছিলেন।'
এদিন মনমোহন সিং সম্পর্কে বলতে গিয়ে একের পর এক ঘটনা উল্লেখ করেন আপ-এর সাংসদ সঞ্জয় সিং।
তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'তিনি যখন সংসদে বলতে উঠতেন, তখন সরকার পক্ষ এবং বিরোধী পক্ষ - দুই তরফের সাংসদরাই তা মন দিয়ে শুনতেন। তিনি মাত্র ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যেই নিজের বক্তব্য শেষ করতেন। তিনি খুব অল্প কয়েকটি কথায় অনেক বড় বড় বিষয় ব্যাখ্য়া করতেন। ভারতের অর্থনীতিকে মজবুত করতে ড. মনমোহন সিংয়ের বিরাট অবদান রয়েছে।'
এই প্রসঙ্গেই সঞ্জয় উল্লেখ করেন, ড. মনমোহন সিং যেদিন ভোট দিতে এসেছিলেন, সেই ঘটনা কিছুতেই ভোলার নয়।
সঞ্জয় বলেন, 'দিল্লি সম্পর্কিত অর্ডিন্যান্স মামলা নিয়ে যখন একটি বিল পেশ করা হয়েছিল, মনমোহন সিংজি হুইলচেয়ারে বসে রাজ্যসভায় এসেছিলেন। শুধুমাত্র ভোট দেওয়ার জন্য। আমাদের দল চিরকাল তাঁর এই সহযোগিতা মনে রাখবে।'