শিশুদের বারবার মুখে আঙুল দেওয়া খুবই স্বাভাবিক। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে এটি শিশুকে নিরাপদ এবং শান্ত বোধ করায়। তবে, অল্প বয়স পর্যন্ত এই অভ্যাস ঠিক আছে। যদি এটি চার-পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে থাকে, তাহলে এটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এটি শিশুদের দাঁতের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই শিশুদের এই অভ্যাস থেকে বিরত রাখা জরুরি। এর জন্য, আপনি কিছু বিশেষ টিপস অনুসরণ করতে পারেন। গুরুগ্রামের আর্টেমিসের ড্যাফোডিলসের প্রধান শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাজীব ছাবড়ার কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে একজন অভিভাবক তাদের সন্তানের এই অভ্যাস সংশোধন করতে পারেন?
বাচ্চাদের আঙুল চোষার অভ্যাস কীভাবে দূর করবেন
১. শিশুর যে কোনও অভ্যাস পরিবর্তন করতে বা পরিত্রাণ পেতে, ধৈর্য ধারণ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ছোটখাটো প্রতিটি কাজের জন্য তিরস্কার করা বা শাস্তি দেওয়া কোনও বিকল্প হতে পারে না। তিরস্কারের কারণে প্রায়শই শিশুর অভ্যাস খারাপ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অতএব, ধৈর্য এবং শান্তভাবে শিশুকে বোঝানোর চেষ্টা করুন।
২. আমরা জানি যে শিশুরা নিজেদের ভালো বোধ করার জন্য আঙুল চুষে খায়। এমন পরিস্থিতিতে, তাদের জড়িয়ে ধরা এবং প্ররোচিত করা একটি ভালো বিকল্প হতে পারে, যা তাদের এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও, বাজারে কিছু খেলনা বা প্যাসিফায়ার পাওয়া যায় যা শিশুরা দাঁত দিয়ে চেপে চুষতে পারে। এই ধরনের বিকল্পগুলি তাদের অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর হতে পারে।
৩. আপনি যদি মনোযোগ দেন, তাহলে বুঝতে পারবেন যে বাচ্চারা প্রায়শই খেলাধুলা করার সময় বা কোনও কাজ করার সময় আঙুল চুষে খায় না। তাই, যতদূর সম্ভব, বাচ্চাদের কোনও না কোনও কাজে ব্যস্ত রাখুন। তাদের সঙ্গে খেলার জন্য সময় বের করুন এবং কিছু শেখানোর অজুহাতে তাদের ব্যস্ত রাখুন। এই বয়সের বাচ্চারা রং নিয়ে খেলতে পছন্দ করে। অতএব, তাদের কাগজ এবং রঙিন স্কেচ কলম দিয়ে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে। তাদের প্রিয় খেলনাগুলোও তাদের ব্যস্ত রাখার একটি ভালো উপায়।
৪. বাচ্চাদের তিরস্কার করার পরিবর্তে, উৎসাহ এবং পুরষ্কারের পথ অবলম্বন করুন। যদি শিশুটি আপনার নির্দেশে আঙুল না চোষে, তাহলে তাকে কিছু পুরষ্কার দিন। আঙুল না চোষার বিনিময়ে আপনি তার পছন্দের খাবার রান্না করা বা তার পছন্দের খেলা খেলার মতো প্রণোদনাও দিতে পারেন। এই ইতিবাচক পদ্ধতিগুলি শিশুদের অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
৫. যদি আঙুল চোষার ফলে শিশুদের দাঁতের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে, তাহলে একজন দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পরিস্থিতি অনুযায়ী ডাক্তার আপনাকে পরামর্শ দিতে পারবেন। এছাড়াও, তিনি শিশুটিকে অভ্যাস থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কিছু উপযুক্ত পরামর্শও দিতে পারেন। যদি শিশুরা তাদের অভ্যাসের কারণে ক্ষতি দেখতে পায়, তাহলে তারা নিজেরাই সেই অভ্যাস ত্যাগ করার চেষ্টা করে।