মানুষের জীবনের একটি অভিন্ন উপাদান হলো মোবাইল ফোন। পড়াশোনা হোক অথবা কাজ, এই মোবাইল ছাড়া জীবন একেবারেই অচল। সকালে ঘুম থেকে উঠেই হাত চলে যায় মুঠোফোনের দিকে। বড়রা তো বটেই, শিশুদের ক্ষেত্রেও এই একই দৃশ্য দেখা যায়। এই অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের ফলে তৈরি হচ্ছে চোখের একটি বিশেষ রোগ যাকে বলা হয় মায়োপিয়া।
মোবাইল, ল্যাপটপ হোক অথবা ট্যাব, এই স্ক্রিন টাইমের আধিক্য সবথেকে বেশি দেখা গেছে মহামারীর পর থেকে। টিভি দেখার পাশাপাশি মুঠো ফোনে অতিরিক্ত সময়ে অতিবাহিত করার ফলে ধীরে ধীরে দৃষ্টি শক্তি কমে যাচ্ছে সকলের। বিশেষ করে শিশুদের উপর এই প্রভাব বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাড়তি স্ক্রিন টাইমের জন্য দূরের জিনিস দেখতে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে, যাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় মায়োপিয়া।
(আরো পড়ুন: গরমে চা কফি তো বটেই, খাওয়া উচিত নয় আখের রসও, জানালো ICMR)
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী জানা গেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হবেন। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা কাছের জিনিস দেখতে পেলেও দূরের জিনিস তাদের দেখতে অসুবিধা হবে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে তবে মায়োপিয়া হওয়ার সবথেকে বড় কারণ হলো সূর্যের আলোয় কম থাকা।
মায়োপিয়ার উপসর্গ কী?
মায়োপিয়া হলে দূরের কোনও জিনিস দেখতে ভীষণ অসুবিধা হয়। দূরের কোন জিনিসকে স্পষ্ট দেখার জন্য চোখ ছোট করে দেখতে হয়। এই রোগ হলে সারাক্ষণ মাথা যন্ত্রণা করে এবং চোখে ব্যথা হয়। আপনার যদি এমন কোনও সমস্যা থাকে তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
চিকিৎসকদের মতে, প্রাকৃতিক আলোয় যত থাকা যাবে তত চোখের জন্য ভালো। কিন্তু বর্তমান যুগে শিশুরা ঘর বন্দি হয়ে রয়েছে যার ফলে সূর্যের আলো গায়ে একেবারেই লাগে না। তার ওপর দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে স্ক্রিন টাইম। তাই চোখের দৃষ্টি উন্নত করার জন্য দিনের বেশিরভাগ সময় বাড়ির বাইরে কাটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
(আরো পড়ুন: ঘুমোতে যাওয়ার আগে ভুলেও খাবেন না এই খাবারগুলি, মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে)
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সূর্যের আলোয় বেশিক্ষণ থাকলে রেটিনায় ডোপামিন নামক একটি যৌগ ক্ষরণ হয়, যার ফলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয় এবং মায়োপিয়া হয় না। এছাড়া সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে না নিয়ে শরীরচর্চা এবং পড়াশোনার মধ্যে সময় কাটানোর কথা বলছেন চিকিৎসকরা। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ভিডিও গেম নয় বরং বাচ্চাদের পাঠাতে হবে মাঠে। তবেই প্রকৃতির আলোয় বেশিক্ষণ থাকতে পারবে শিশুরা।