৮ আগস্ট ২০২৪, চলে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ৮০ বছর বয়সে থেমে গেল তাঁর জীবনযাত্রা। অবসান হলো এক ইতিহাসের। চারিদিকে আজ শুধুই লাল সেলাম, কমরেড আজ শেষ যাত্রায়। চোখের জলে আজ সারা পশ্চিমবঙ্গবাসী বিদায় জানাচ্ছে প্রিয় নেতাকে।
আজ পাম অ্যাভিনিউয়ের ছোট্ট ফ্ল্যাট থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে বিধানসভায়। মরণোত্তর চক্ষুদান করে গিয়েছিলেন তিনি। দেহও দান করা হবে, সেই দেহ নিয়ে গবেষণা করবেন চিকিৎসা শাস্ত্রের ছাত্র-ছাত্রীরা। বাংলার উন্নতির জন্য শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত চিন্তা করে গিয়েছিলেন তিনি, অসুস্থ অবস্থাতেও খোঁজ নিয়েছিলেন রাজ্য রাজনীতির। নিঃসন্দেহে আজ বাংলা হারালো এক সৎ রাজনীতিবিদকে।
কোন রোগে আক্রান্ত ছিলেন বুদ্ধবাবু?
দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাসজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। শেষের দিকে অবস্থা এতটাই গুরুতর হয়ে গিয়েছিল, যে বেঁচে থাকাও হয়ে উঠেছিল দুঃসহ। কিন্তু কী এই রোগ? কেমনই বা লক্ষণ এই রোগের? চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, বুদ্ধদেববাবু সিওপিডি- তে আক্রান্ত ছিলেন।
(আরও পড়ুন: কীভাবে করতে হয় দেহদান? কারা করতে পারেন? মৃত্যুর পর পরিবারের কী করণীয়, জানুন পুরোটা)
সিওপিডি কী?
সিওপিডি কথাটির পুরো অর্থ হলো ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’। অতিরিক্ত ধূমপান করার ফলে এই রোগ হতে পারে। দিনে যারা ১০-১২ টি সিগারেট খেয়ে থাকেন, তাদের মধ্যে এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা সবথেকে বেশি থাকে।
যদিও শুধু ধূমপান করার জন্য নয়, গাড়ি বা মেশিনের ধোঁয়ায়, উনুনের ধোঁয়ায় এবং পরিবেশ দূষণের ফলেও এই রোগ হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই সমস্ত ধোঁয়ায় থাকে এমন কিছু ক্ষতিকারক রাসায়নিক, যা ফুসফুসের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় প্রদাহ সৃষ্টি করে।
দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে যদি এমন বিষাক্ত ধোয়া প্রবেশ করে, তখন শ্বাসছিদ্রগুলি নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং শ্বাস নিতে সমস্যা হয় রোগীর। তবে শুধু সিওপিডি নয়, বুদ্ধদেব বাবুর ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতেও ছিল মারাত্মক রকমের সংক্রমণ। শেষের দিকে নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন তিনি। এমনকি ২০২১ সালে মে মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, যার ফলে শরীরের আরও বেশি সমস্যা দেখা দেয়।
(আরও পড়ুন: দার্জিলিংয়ে বেড়াতে গেলেই দিতে হবে পর্যটন কর, কত টাকা, কোথায় দেবেন? সবটা জানুন)
সিওপিডি রোগের লক্ষণ:
সিওপিডি রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর কাশি এবং হালকা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। বেশি পরিশ্রম করলে হতে পারে নিঃশ্বাসের সমস্যা। প্রথমেই যদি সতর্ক না হওয়া যায়, তাহলে ধীরে ধীরে ফুসফুসের ক্ষমতা কমতে থাকে এবং বাড়তে থাকে নিঃশ্বাসের কষ্ট। অল্পতেই ঠান্ডা লেগে যাওয়া, বুকে কফ বসে যাওয়া এই সবকিছুই এই রোগের লক্ষণ।