বাংলাদেশে আজ পয়লা বৈশাখ। আরম্ভ ১৪৩২ বঙ্গাব্দের। এই দিন সকাল থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত হচ্ছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। ঘরে ঘরে আজ উৎসবের আমেজ। রাজধানী ঢাকাতেও আজ নানা বর্ণাঢ্য আয়োজন রয়েছে।
রমণার বটমূল
ভোরেই রমণার বটমূলে আয়োজিত হয়েছে বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী সঙ্গীত ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘এসো হে বৈশাখ’। ভোর ছটা নাগাদ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছায়ানটের ৫৮তম বর্ষবরণের সূচনা হয়। এই বছর অনুষ্ঠানের মূল সুর ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। এই বছরের অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়েছে ৯টি সম্মিলিত গান, ১২টি একক কণ্ঠের গান এবং তিনটি আবৃত্তি। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছায়ানটের কথন পাঠে ছিলেন ডা. সারওয়ার আলী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
‘নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’–এই স্লোগানকে কেন্দ্র করেই সমকাল, ইতিহাস, ঐতিহ্যকে ঘিরে এবারের নববর্ষের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। বাঙালি ছাড়াও এই শোভাযাত্রায় পাহাড় ও সমতলের ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর ৪৯৪ জন শিল্পী অংশ নিয়েছে বর্ণাঢ্য সাজে। অংশগ্রহণকারী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে বাঙালি, সাঁওতাল, ওঁরাও, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, পাংখোয়া, বম, ম্রো, রাখাইন, খিয়াং, বানাই, তুরী, মাহালি, মালপাহাড়িয়া, কোল, মাহাতো, মুণ্ডা রাজোয়াড়, মনিপুরী, খাসিয়া, চা-জনগোষ্ঠী, গারো, হাজং, কোচ ও মালো। এছাড়াও শোভাযাত্রায় দুশোর বেশি ব্যান্ড মিউজিশিয়ানস অংশগ্রহণ করেছে এই বছর। শান্তি কামনায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে সম্মিলিতভাবে গান পরিবেশিত হয়েছে শোভাযাত্রায়।
জাতীয় সংসদ ভবন
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ‘ড্রোন-শো’ ও ‘ব্যান্ড-শো’ আয়োজিত হয়েছে। সহায়তায় ঢাকার চীনা দূতাবাস এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ।
রবীন্দ্র সরোবর
পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে সকাল ৬টায় সুরের ধারার আয়োজনে পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তমঞ্চে হয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। রবীন্দ্র সরোবরের আশেপাশে থাকছে বিভিন্ন স্বাদের বাঙালি খাবারের আয়োজন।
শাহবাগ
শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সকাল ১০টা থেকে সারা দিন ‘ঐ নতুনের কেতন ওড়ে’ শিরোনামে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক ঐক্যফ্রন্ট। এই আয়োজনে চিরায়ত বাংলা গান, দেশাত্মবোধক গান, পুঁথিপাঠ, গম্ভীরা ও নাটিকা পরিবেশিত হবে। অনুষ্ঠানে ১৪টি শিল্পীগোষ্ঠী অংশগ্রহণ করেছে।