একটা সময় টলিউডের আদর্শ দম্পতি হিসাবে ধরা হত যিশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তকে। যিশুর কঠিন সময়ে তাঁকে আগলেছেন স্ত্রী। ভালোবাসার জন্য মুম্বইয়ের কেরিয়ার আগেই বলিদান দিয়েছিলেন, মা হওয়ার পর অভিনয় কেরিয়ারেই কার্যত ইতি টানেন নীলাঞ্জনা।
তারপরেও দুজনের দু-দশকের দাম্পত্য টিকলো না। জানা গিয়েছে, যিশু-নীলাঞ্জনার সম্পর্কে ভাঙনের কারণ তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি। মুম্বই গিয়েই নাকি আপ্ত সহায়ক শিনাল সুর্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে যিশুর। কোনওভাবেই সেই সম্পর্ক ছেড়ে বেরোতে রাজি নন নায়ক। এবারের পুজোতেও আলাদা আলাদা যিশু-নীলাঞ্জনা। দুই মেয়েও এই লড়াইয়ে মায়ের পাশে। বাবার সঙ্গে কার্যত মুখ দেখাদেখি বন্ধ সারা ও জারার।
স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী নামক একটি পডকাস্ট শো-তে মন খুলে কথা বলেছেন নীলাঞ্জনা। অতীতের স্মৃতি হাতড়ে জানিয়েছেন, তারকা-র স্ত্রী হওয়ার কী মাশুল গুণতে হয়েছে তাঁকে। বিয়ের বছর ঘুরতেই সারার জন্ম দেন নীলাঞ্জনা। সালটা ২০০৫। এরপর প্রসবোত্তর অবসাদ ঘিরে ধরেছিল তাঁকে। বেড়েছিল ওজনও। সেইসব কাটিয়ে পরের বছর স্বামী যিশু ও পরমব্রতর সঙ্গে মৈনাক ভৌমিকের ‘আমরা’ ছবিতে কাজ করেছিলেন নীলাঞ্জনা। সেই ছবিতে বেশ ছিপছিপে লাগায় প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন নতুন মা নীলাঞ্জনা। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি একটা জিনিস বুঝতে পারি না। আজকে আমি একজন তারকার স্ত্রী, কিন্তু তার মানে কি আপনার অধিকার রয়েছে আমাকে নীচু করার বা আমাকে সবসময় জাজ করার? হতেই পারে আমি চাই না আমি কোনও নির্দিষ্টরকম লাগুক। এটা আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। কেন আমাকে ওজন ঝরাতেই হবে? আমি সদ্য এক সন্তানের জন্ম দিয়েছি। কেন আমাকে কিছু প্রমাণ করতে হবে? আমি কারুর কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নই’।
ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই জীবনের কঠিন সময়ে লড়াই করায় বিশ্বাসী নীলাঞ্জনা। তাই তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন-'আমি হয়তো খুব একটা ভালো নই... আর এটা এই ভাবনা থেকে আমাকে বেরোতে হতো।' মা হওয়ার পর শুধু যিশুর স্ত্রী হিসাবেই তাঁর পরিচিতি আবদ্ধ ছিল,তা মানতে না-রাজ নীলাঞ্জনা। তিনি বলেন, ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানির মতো স্টার জলসার ফ্ল্যাগশিপ শো-এর প্রযোজক তিনি, এর পাশাপাশি তাঁর প্রযোজনায় আরও অনেক ধারাবাহিক সাফল্যের মুখ দেখেছে। তাই মা হওয়ার পর অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও কাজ থেকে দূরে সরে যাননি তিনি।
আরও পড়ুন-'বিয়ের পরপরই সারার জন্ম….আমি বসে কাঁদতাম,খুব একা লাগত', প্রসবোত্তর অবসাদ নিয়ে নীলাঞ্জনা
দীর্ঘ সময় ধরে যিশু বলিউড ও দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার নিয়ে ব্য়স্ত থাকলেও একা হাতে সংসার সামলেছেন নীলাঞ্জনা। পাশাপাশি যিশু উজ্জ্বল সেনগুপ্ত প্রোডাকশনের দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। তবে সেই দায়িত্ব ঝেরে ফেলে নতুন শুরু করেছেন নীলাঞ্জনা। দুই মেয়ের নামে খুলেছেন নিনি-চিনিস মাম্মাস প্রোডাকশন। যার আওতায় এই মুহূর্তে তৈরি হচ্ছে জি বাংলার আনন্দী।