কলেজের গণ্ডি পরা করার আগে মা হয়েছিলেন স্বস্তিকা। স্বামী প্রমিত সেনের সঙ্গে বিয়ের দু-বছরের মাথাতেই বিচ্ছেদ (আইনত আজও স্বামী-স্ত্রী)। মেয়েকে একাই কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন স্বস্তিকা। অভিনেত্রীর প্রাণ ভ্রমরা মেয়ে অন্বেষা।
ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছে অন্বেষা। দীর্ঘ কয়েকটা সপ্তাহ মেয়ের সঙ্গে সে দেশেই ছিলেন স্বস্তিকা। তাই আর জি কর ইস্যুতে সোশ্যালে সক্রিয় হলেও ময়দানে নেমে প্রতিবাদ করতে পারেননি। মেয়েকে বিদেশে একা রেখে আসার আগে উদ্বিগ্ন স্বস্তিকা। মেয়ের জন্য খোলা চিঠি লিখলেন সোশ্যালে। জানালেন তাঁর জীবনে মেয়ে অন্বেষার গুরুত্ব কতটা, বা বলা ভালো তাঁর জীবনের সমার্থক মেয়ে।
স্বস্তিকা লেখেন, আমার হৃদয়, আমার সমস্ত হৃদয় জুড়ে শুধু তুই, আমার ফুসফুস, কিডনি,অন্ত্র সব তোর জন্য। আমার জরায়ু, ডিম্বাশয় যতদিন ছিল, সেটাও তোর… আমার মাংস, হাড়, পেশি, টিস্যু,নার্ভ, এমনকী ঐন্দ্রিয়ও শুধু তোর জন্য।' অভিনেত্রীর সংযোজন, ‘মাতৃত্বের সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপার হল, তুমি আর নিজের নও, তুমি সন্তানের। তোকে ভালোবাসার জন্যই আমার বাঁচা। তুই যা হতে চাস, তুই যা করতে চাস সবকিছুকে বাস্তবায়িত করা। আমি আছি, আমার সময় যতক্ষণ না ফুরোচ্ছে, তুই যা কিছু হারিয়েছিল তা পরিপূর্ণ করতে, যা কিছু গড়েছিস তা সযত্নে লালন করতে, আমি অন্য কোনও জীবন নয়, শুধু তোর সঙ্গই চাই। আবার যবে দেখা হবে, ততদিন সুরক্ষিত থাক, সুস্থ থাক, কঠিন সময়ে আমরা বেঁচে আছি। এইটুকুই আমার চাওয়া। আমার পুতুল, আমার বেবি, আমাকে মা হিসাবে বেছে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। মনে রাখিস, আমি তোকে ভালোবাসি। ’
এই পোস্টের সঙ্গে বাথরোবে মেয়ের একটি আদুরে ছবি পোস্ট করেছেন স্বস্তিকা। সেখানে সফট টয় জড়িয়ে বিছানায় বসে অন্বেষা। মা-কে সর্বদা আগলে রাখেন অন্বেষা। বঙ্গ সম্মেলন সেরে গত মাসে UK-তে পৌঁছেছিলেন স্বস্তিকা। মায়ের মতোই স্পষ্টবক্তা ২৪ বছর বয়সী অন্বেষা। নিজের প্রেম নিয়েও কোনও রাখঢাক নেই। পড়াশোনায় বারাবরই তুখোড় অন্বেষা। মুম্বইয়ের নামী কলেজ থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি হাতে পান, তারপর স্কলারশিপ পেয়ে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন অন্বেষা।
আপতত ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যেই এক বছর চাকরি করবেন অন্বেষা। তারপর পিএইচডির পড়াশোনা শুরু করবেন। আপাতত দেশে ফেরার কোনও প্ল্যান নেই তাঁর। মেয়েকে নিজের মতো করে বড় হওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছেন স্বস্তিকা। বেছে নিতে দিয়েছেন পছন্দের কেরিয়ার। মাসখানেক আগেই হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে অন্বেষার আপোসহীন মেজাজ নিয়ে স্বস্তিকা বলেন, ‘আমার মধ্যে যে সত্ত্বা রয়েছে ওর মধ্যে সেগুলো আরও বেশি করে থাকা উচিত। পৃথিবী যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে নিজের মতো করে জীবনটা গুছিয়ে নেওয়াটা জরুরি। আমি ওর বয়সে ওতো গুছানো ছিলাম না। সময় এগিয়েছে, অনেক বদল এসেছে। নিজের যা ঠিক মনে হবে সেটা করাটা জরুরি। তাছাড়া মায়ের সব বারণ শোনবার বয়সও ওর নেই।’