২০২৪-এর শুরু থেকেই প্রকাশ্যে আসে ফেডারেশন ও ডিরেক্টর্স গিল্ডের দ্বন্দ্ব। বার বার এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আনে। আর দুই পক্ষের এই লড়াইয়ে বারবার সমস্যায় পড়েছে টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। ১ মে শ্রমিক দিবসেই ছিল মেগা মিটিং। টেকনিশিয়ান স্টুডিয়োয় মিটিং উপলক্ষ্যে টালিগঞ্জের কলাকুশলীদের সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’র অন্তর্ভুক্ত সমস্ত গিল্ড এবং সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, তার আগে দিন অর্থাৎ বুধবার রাতে সাড়ে ১৫ মিনিটের একটি বিশেষ ভিডিয়ো বার্তায় ফেডারেশন-পরিচালক দ্বন্দ্ব নিয়ে অনির্বাণ ভট্টাচার্য, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায়, ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী ও বিদুলা ভট্টাচার্যরা নানা কথা ভাগ করে নেন। কেউ বলেন, ‘টেকনিশিয়ানরা হুমকির’ মধ্যে পড়ছেন। টেকনিশিয়ানদের কাজ করার থেকে ‘আটকানো’ হচ্ছে। কিন্তু এ সবের পড়েও তাঁরা অর্থাৎ ডিরেক্টর্স অ্যাস্যোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া নাকি আলোচনায় বসতে চেয়েছিল কিন্তু ফেডারেশন সে আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি।
এরপর বৃহস্পতিবার ১ মে টেকনিশিয়ানদের কাজের অধিকার, শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা, মজুরিবৃদ্ধি, কাজ করার পরিস্থিতি আরও উন্নত করতেই আয়োজন করা হয় এই সভার। এই মিটিংয়ে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের মুখ ‘অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে, এক জোট থাকতে হবে’ এই কথা ব্লতে শোনা যায়।
তাছাড়াও এই আলোচনা সভায় বার বার বুধবার রাতের ভিডিয়োর কথা উঠে আসে স্বরূপ বিশ্বাসের মুখে। তিনি দ্যা ওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এই সুপরিকল্পিত ভিডিয়ো তৈরি করতে যে অর্থ ওঁরা খরচ করেছেন, তা না করে সেই অর্থ টেকনিশিয়ানদের দিতে পারতেন!’
২৮টি গিল্ডের প্রায় ৪৭২ নির্বাচিত সদস্যরা মিটিংয়ে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত মিটিং চলে। দ্য ওয়ালের রিপোর্ট অনুসারে সূত্রের খবর, ‘সমস্ত নির্বাচিত সদস্যরা সর্বসম্মত ভাবে ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি তথা সভাপতিকে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা এবং ক্ষমতা দিয়েছেন।টেকনিশিয়ানদের সমর্থনে ফেডারেশন সভাপতি ভবিষ্যতে যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তার প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা এবং সম্মতি জানিয়েছেন। যাঁরা ফেডারেশনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতাও রয়েছে, সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের।’
তাছাড়াও এই আলোচনায় উঠে এসেছে ‘আজীবন অসহযোগিতা'র কথাও। দ্য ওয়ালের রিপোর্ট অনুসারে সূত্রের জানায়, ‘সদস্যদের বড় স্ক্রিনে ওই ভিডিয়োটি দেখানো হয়েছে, এবং হাইকোর্টের মামলায় কার কী বক্তব্য ছিল, তাও দেখানো হয়। এই মামলার বাইরেও যাঁরা, তাঁদের সমর্থন করছেন, তাঁদের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এবং তা বেশ উত্তপ্ত পর্যায়ে পৌঁছয়। আলোচনায় একটাই কথা বারবার উঠে এসেছে তাঁদের প্রতি ‘আজীবন অসহযোগিতা!’
এই ‘আজীবন অসহযোগিতা’র সিদ্ধান্ত যদি কার্যকরী হয়, তা হলে এই প্রথম টলিপাড়ার একাধিক পরিচালকরা একসঙ্গে কলাকুশলীদের ‘Non cooperation’-এর মুখে পড়তে চলেছেন! কিন্তু ‘আজীবন অসহযোগিতা!’ তো ভয়ঙ্কর বিষয়। FCTWEI সভাপতি ‘আজীবন অসহযোগিতা’র সিদ্ধান্ত কি নিতে পারেন? তা কি ন্যায্য হবে? টলিপাড়ার ভবিষৎ তবে কী? উঠছে প্রশ্ন।