Anil Sharma: পরিচালক অনিল শর্মা বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেতাদের ক্রমবর্ধমান ভ্রমণের ব্যয় সম্পর্কে কথা বলেছেন। অভিনেতাদের প্রেক্ষাগৃহে দেখতে যাওয়ার আকর্ষণও কমে এসেছে বলে তিনি মনে করেন
'সিনেমা চলছে না, এদিকে অভিনেতারা শো-অফ করছেন'…চাঁচাছোলা পরিচালক অনিল শর্মা
পরিচালক অনিল শর্মা ইন্ডাস্ট্রির সেই অভ্যন্তরীণ সদস্যদের তালিকায় যোগ দিয়েছেন যারা অভিনেতাদের সফরসঙ্গীদের জন্য স্ফীত ব্যয় নিয়ে চলমান বিতর্ক সম্পর্কে তাঁদের মতামত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, 'অভিনেতারা এমন সময়ে তাঁদের ভ্রমণের খরচ বাড়ানোর দুঃসাহস দেখাযন যখন তাঁদের চলচ্চিত্রগুলি প্রেক্ষাগৃহে কাজ করছে না। ২০২৩ সালের ব্লকবাস্টার হিট 'গদর ২'-এর ডেলিভারি দেওয়া শর্মা বলেন, "অয্ক্টর্স কি ইতনি ভ্যালু হি নেহি রেহ গয়ি আব কি পাবলিক উনকো দেখনে আয়ে।' ('অভিনেতাদের আর এত মূল্য দেওয়া হয় না যে জনসাধারণ তাদের দেখতে আসে')
শর্মা উল্লেখ করেছেন যে খুব কম অভিনেতাই আছেন যারা দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে এসে একটি চলচ্চিত্র দেখার জন্য আকৃষ্ট করার জন্য ‘মূল্য এবং টান’ রাখেন। দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির উদাহরণ টেনে শর্মা বলেন, ‘সেই সময় চলে গেছে যখন আমরা (হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি) ধর্মেন্দ্র এবং আরও অনেকের সঙ্গে ছবি বানাতাম, এক সপ্তাহ আগে টিকিট বুক হয়ে যেত। এখন তা হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাবলিক আপনাকে প্রেক্ষাগৃহে দেখতে আসছে না। ওটিটি তে একপ্রকার জোর করে ছবিগুলি দেখানো হচ্ছে। তাও ২৫টা ছবির মধ্যে হয়তো ২টো দেখা হলো। আপনি নিজেও জানেন না যে আপনার ছবিটি ফ্লপ বা হিট কিনা। আপনি নিজের উপর লক্ষ্য রাখুন এবং আপনার নিজের জগতে বাস করেন।’
শর্মা ইন্ডাস্ট্রির অবনতিশীল অবস্থার জন্য বর্তমান প্রজন্মের অভিনেতাদের সমালোচনা করতে দ্বিধা করেন না। তিনি পর্যবেক্ষণ করেন যে 'অভিনেতারা আজকাল কেবল সোশ্যাল মিডিয়ার জন্যই কাজ করছেন'। হয় তারা ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় করছে বা বিজ্ঞাপন দেখছে, সিনেমা থেকে তাঁদের কিছুই সেভাবে উপার্জন আসছে না, কারণ তাঁদের দেখতে জনসাধারন আর আসে না। এটা তিক্ত সত্য।' তিনি যোগ করেন, ‘মুম্বইয়ের ৩-৪ জন নায়ক ছাড়া শনি বা রবিবারেও হাউসফুল পাওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।’
শর্মা বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও তুলে ধরেন: নির্দিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাছ থেকে সারগর্ভ বিষয়বস্তুর অভাব। তিনি বলেন, ‘কনটেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমার মনে হয়, অনেক পরিচালক, লেখক, অভিনেতা ভারসোভা ও বান্দ্রার বাইরে পৃথিবী দেখেননি। সুতরাং তাঁরা এমনকি জানেন না যে ভারতে কী ধরণের সামগ্রী কাজ করে।' তিনি মনে করেন যে কনটেন্ট বলতে তাঁদের কাছে ওটিটি। সমাজ ওখানে শেষ তো ওই অবধিই কনটেন্ট বানাচ্ছেন তাঁরা।
উপরন্তু, শর্মা বক্স অফিসে বর্তমান মন্দার কারণ হিসাবে অভিনেতাদের অতিরিক্ত এক্সপোজারকে উল্লেখ করেছেন। দ্বিতীয়ত, অভিনেতাদের আকর্ষণও কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি জিম এবং বিমানবন্দরের লুকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিটি অভিনেতাকে সারাক্ষণ দেখছি। পাবলিক কেন তাদের প্রেক্ষাগৃহে দেখার জন্য অর্থ প্রদান করবে। তাঁরা ওভার এক্সপোজড! অভিনেতাদের দেখার আকর্ষণ এই পাপারাজ্জিরা নষ্ট করে দিয়েছে। সে কারণে তাঁরা হয়তো সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন বা ব্র্যান্ড পাবে, কিন্তু থিয়েট্রিক্যাল এক্সক্লুসিভিটি শেষ হয়ে গিয়েছে।’
তিনি দক্ষিণ ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সাথে তুলনা করেছেন, যেখানে জুনিয়র এনটিআর, রাম চরণ এবং প্রভাসের মতো অভিনেতারা তাঁদের আকর্ষণ বজায় রাখতে সক্ষম হন। তাঁর মতে, ‘আপনি যদি দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির দিকে তাকান, অভিনেতারা তাঁদের আকর্ষণ বজায় রেখেছেন। প্রেক্ষাগৃহে তাঁদের দেখার জন্য মানুষ উচ্ছ্বসিত। কখনও ভালো কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু পাওয়া গেল, কিন্তু কোনও বড় অভিনেতা নয়, তাতেও ছবিটি ব্লকবাস্টারও হতে পারে। এই মুহূর্তে কনটেন্ট বা হিরো বলে কিছু নেই, ওদের নিজেদের খরচ উঠে যাচ্ছে, ব্যাস এর বেশি কিচ্ছু নেই।’