মুম্বইতে চুটিয়ে কাজ করলেও কলকাতায় এসে বাংলা ছবিতে বরাবর কাজ করতে চেয়েছেন মুম্বইয়ের বাঙালি অভিনেতা দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য। 'মির্জাপুর' সিরিজের ডাক্তারের চরিত্র হোক কিংবা ক্রিমিনাল জাস্টিস' এর লায়েক, দিব্যেন্দুর অভিনয় দক্ষতা প্রশংসা কুড়িয়েছে দর্শক ও ছবি সমালোচকদের দুই তরফেই। এইমুহূর্তে হিন্দি ওয়েব সিরিজ জগতে অত্যন্ত পরিচিত মুখ দিব্যেন্দু। এবার ফের একবার বাংলা ছবি 'বনবিবি'-র জন্য তাই কলকাতায় ফিরতে পেরে খুশি আমির খানের 'মঙ্গল পান্ডে' ছবির এই সহ-অভিনেতা। রাজদীপ ঘোষ পরিচালিত 'বনবিবি' ছবিতে প্রধান খলনায়কের ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। যদিও দিব্যেন্দুর দাবি, 'খলনায়ক নয়, ধূসর শব্দটি আমার এই চরিত্রের সঙ্গে সবথেকে মানানসই'।'বনবিবি' প্রসঙ্গে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিব্যেন্দু জানান যে মুম্বইয়ে ব্যস্ততা থাকা সত্বেও এই ছবির প্রস্তাব পেয়ে প্রথম থেকেই আগ্রহী হয়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রথম কারণ, এই ছবির গল্প। অভিনেতার কথায়, 'সুন্দরবনের প্রেক্ষাপটে সেখানকার বনবিবি এবং দক্ষিণ রায়ের লোকগাথাকে যেভাবে সমকালীন ঘটনা ও চরিত্রে পেশ করা হয়েছে তা শুনে চমকে উঠেছিলাম। সত্যি কথা বলতে কী, এই ধরণের ধূসর চরিত্র আগে করিনি। কারণ আমার মা। কয়েক মাস আগেই মা প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর বড় ইচ্ছে ছিল আমি যেন বাংলা ছবিতে অভিনয় করি। তাই...'। ছবিতে দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য অভিনীত চরিত্রের নাম 'জাহাঙ্গীর'। দুঃসাহসী ও খুনে এই জাহাঙ্গীর বাঘের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে ফিরেছিল বলে গোটা সুন্দরবনের অধিবাসীদের কাছে তাঁর পরিচিতি 'খোঁড়া বাদশা' নামে। জানা গেল, আপাতদৃষ্টিতে চরিত্রটিকে ভয়াল এবং নিষ্ঠুর মনে হলেও পরতে পরতে নানান চমক লুকিয়ে রয়েছে 'জাহাঙ্গীর'-এর। 'বনবিবি'-তে তিনিই যে 'দক্ষিণ রায়' তা নিজেই অকপটে জানালেন দিব্যেন্দু। বললেন, 'জাহাঙ্গীর-এর মধ্যে কিছু পাশবিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশেষ করে বাঘের। দর্শক এই ছবি দেখামাত্রই তা বুঝতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস। বাঘ তো বাঘই হয়, সে প্রচলিত গল্পে থাকুক কিংবা চোখের সামনে!'তবে লোকগাথার ভয়াল বাঘরূপী দক্ষিণ রায়-এর সঙ্গে 'জাহাঙ্গীর' কোথায় মিলেমিশে এক হয়ে গেছে এই ছবিতে, সে বিষয়ে অবশ্য দিব্যেন্দু মুখ খোলেননি।প্রসঙ্গত, কলকাতায় ফের একবার আসতে পেরে দারুণ খুশি এই অভিনেতা। তাঁর কথায়, ' আমি বেহালার ছেলে। এখানেই স্কুল, কলেজে পড়াশোনা করেছি। নন্দন চত্বরে বসেছি, হেঁটেছি। যতই মুম্বইয়ে থাকি কলকাতা তো আমার শহর। তাছাড়া 'বনবিবি'-র প্রযোজক রানা সরকারের সঙ্গেও আমার বহুদিনের পরিচিতি। পরিচালকও অনেক দিনের বন্ধু'। সুতরাং, দিব্যেন্দুর জন্য এ যেন আক্ষরিক অর্থেই 'ঘর ওয়াপসি'।'বনবিবি'-তে দিব্যেন্দু ছাড়াও অন্যতম মুখ্যভূমিকায় দেখা যাবে পার্নো মিত্র-কে। তাঁর অভিনীত 'রেশম' এর সঙ্গে 'জাহাঙ্গীর'-এর টক্করই ছবির অন্যতম উপজীব্য। বর্তমানে জোরকদমে কলকাতা থেকে অনতিদূরে চলছে এই ছবির শ্যুটিং। দ্বিতীয় দফার শ্যুটিং রয়েছে সুন্দরবনে। সেখানেও গোটা ইউনিটের সঙ্গে পাড়ি দেবেন 'দক্ষিণ রায়'। সেসব শেষ করেই 'জামতারা ২', 'খুদা হাফিজ ২' শ্যুটের জন্য মুম্বই উড়ে যাবেন দিব্যেন্দু।