জগৎবল্লভপুরএই বিধানসভায় এবারের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হলেন সীতানাথ ঘোষ। এই কেন্দ্রে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন অনুপম ঘোষ। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে এই কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন আইএসএফের শেখ সাব্বির আহমেদ।হাওড়া জেলায় পোড়ামাটির কারুকার্য—সহ অনেক প্রাচীন মন্দিরের অস্তিত্ব রয়েছে। প্রাচীন জৈন, বৌদ্ধ বা হিন্দু সাহিত্যে হাওড়া অঞ্চলের সুনির্দিষ্ট উল্লেখ নেই। গ্রিক বা চিনা লেখকদের রচনায় এই অঞ্চলের কোনও বিবরণ পাওয়া যায় না। তবে গবেষকদের ধারণা, প্রাচীনকালে রাঢ়ের অন্তর্গত সুহ্ম অঞ্চলের দক্ষিণাংশ হাওড়া ও অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা নিয়ে গঠিত ছিল। প্রাচীনকালে এই হাওড়া জেলায় ছিল ভুরশুট রাজ্য। এটি ছিল অধুনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়া ও হুগলি জেলার অন্তর্গত একটি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় রাজ্য। রাঢ় অঞ্চলের দক্ষিণাঞ্চলে ভুরশুট রাজ্যটি স্থাপিত হয়েছিল। এই রাজ্যের অধিবাসীরা ‘ভুরিশ্রেষ্ঠী’ নামে পরিচিত ছিল। এরা ছিল মূলত বণিক। এদের নামানুসারেই রাজ্যের নামকরণ হয় ‘ভুরশুট’।যদিও সম্ভবত ভুরশুটই ছিল রাঢ়ি ব্রাহ্মণদের মূল বসত এলাকা ছিল। পাল সাম্রাজ্যের উত্থানের সময় কোনও এক সুর রাজা এই রাজ্য শাসন করতেন। একাধিক সামন্ত রাজা এই রাজ্য শাসন করেছিলেন। এই রাজ্যের রানি ভবশংকরী ছিলেন এক বীর রমণী যিনি সম্রাট আকবরের কাছ থেকে রায়বাঘিনী উপাধি পান। ধীবর রাজবংশের (সম্ভবত চতুর্দশ থেকে পঞ্চদশ শতাব্দী) লোককথায় এই রাজ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। এরপর কোনও এক ব্রাহ্মণ রাজবংশ এই রাজ্য শাসন করেছিল। দক্ষিণ রাঢ়ের ভূরিশ্রেষ্ঠিক নামক অঞ্চলটিও বর্তমান হাওড়ার আমতা-উদয়নারায়ণপুর-ডিহি ভুরশুট অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। অনুমান করা হয়, অষ্টম থেকে দশম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে বর্তমান হাওড়া অঞ্চলের ভূরিশ্রেষ্ঠ (অধুনা ভুরশুট) ছিল একটি সমৃদ্ধ বাণিজ্যনগরী। জগৎবল্লভপুর হাওড়া জেলার একটি বিধানসভা কেন্দ্র। ৬ এপ্রিল জগৎবল্লভপুরে ভোটগ্রহণ।সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, জগৎবল্লভপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি জগৎবল্লভপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি যেমন বড়্গাছিয়া-১, বড়্গাছিয়া-২, হাঁটাল, অনন্তবাটি, জগৎবল্লভপুর-১, জগৎবল্লভপুর-২, পাতিহাল, শঙ্করহাটি-১, শঙ্করহাটি-২, শিয়ালডাঙ্গা ও মাজু যুক্ত হয়। পাশাপাশি বেগড়ি, ডোমজুড়, দক্ষিণ ঝাঁপড়দহ, উত্তর ঝাঁপড়দহ, পার্বতীপুর, রুদ্রপুর ও মাকরদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েত গুলি ডোমজুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অংশ যুক্ত হয়।জগৎবল্লভপুর বিধানসভা কেন্দ্র ২৭ নম্বর শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ আবদুল ঘানি জয়ী হয়েছিলেন৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ১০৩,৩৪৮৷ দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী বৈদ্যনাথ বসু৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৭৮,৬৬৭৷ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ আবদুল ঘানি তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম প্রার্থী বৈদ্যনাথ বসুকে ২৪ হাজার ৬৮১ ভোটে পরাজিত করেছিলেন।