পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার একদা দলের দাপুটে নেতা সুশান্ত ঘোষের বুথেই প্রার্থী দিতে পারল না সিপিএম। তাঁর দাবি শংসাপত্রের সমস্যার জেরেই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে গিয়েছে। তবে সিপিএম নেতা অভিযোগ, শাসকদল ভয় দেখিয়ে বিরোধীশূন্য করতে চাইছে। গড়বেতার তিন নম্বর ব্লকের উড়াসায় গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮৬ নম্বর বুথেই প্রার্থী দিতে পারেনি সিপিএম।
(পড়তে পারেন। BDO-র বিরুদ্ধে মনোনয়ন কারচুপির অভিযোগে CBI তদন্ত, ডিভিশন বেঞ্চে গেল রাজ্য)
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, শুধু বামেরা নয়, বিজেপিরও কোনও প্রার্থী নেই ওই বুথে। যার ফলে তফসিলি জাতি মহিলা সংরক্ষিত ওই আসনে বিনা লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী ময়না রায়।
কোন প্রার্থী দিতে পারল না সিপিএম? লোকের অভাব না কি অন্য কোনও কারণ রয়েছে? জবাবে সুশান্ত ঘোষ বলেন, 'ওই আসানটি সংরক্ষিত। যাকে প্রার্থী হিসাবে আমরা দাঁড় করালাম তাঁর সার্টিফিকেট নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। তাই মনোনয়ন বাতিল হয়ে গিয়েছে।'
তবে এই নয় যে এটাই জেলার সব জায়গার ছবি। সিপিএম নেতার দাবি জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতিতে লড়াই দিচ্ছে দল। গ্রামের ৩টি বুথে পঞ্চায়েতের চারটি আসনের মধ্যে ২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম। পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসনেও সিপিএম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তিনি বলেন, 'যাঁরা লোক নেই বলছেন তাঁরা আসলে এই নির্বাচনকে বিরোধী শূন্য করতে চাইছেন। মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে কোণঠাসা করতে চাইছেন।' তবে পাশের বুথে সুশান্ত ঘোষের পরিবারের সদস্য প্রার্থী হয়েছেন। এ নিয়ে সিপিএম নেতা বলেন, ‘পাশের বুথে আমার ভাইয়ের স্ত্রী প্রার্থী হয়েছে।’
প্রসঙ্গত ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকারে ক্ষমতায় আসার পর কণ্ডালকাণ্ডে সুশান্ত ঘোষের নাম জড়ায়। তাঁর বাড়ি আশপাশে থেকে উদ্ধার হয় কঙ্কাল। জেলেও যেতে হয় দাপুটে এই সিপিএম নেতাকে। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। তবে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই আবার সিপিএমের হয়ে সক্রিয় রাজনীতি করছেন। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও তাঁকে সক্রিয় হিসাবে দেখা গিয়েছেন। ভোট করাতে গিয়ে শাসকদলের কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হওয়ারও অভিযোগ তোলেন।
তবে এই প্রার্থী দিতে না পারা প্রসঙ্গে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পবন শাহ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'মানুষ শান্তি চায়। এক সময় যে সুশান্ত ঘোষ হার্মাদদের তৈরি এখন কেউ তাঁর সঙ্গে থাকতে চাইছে না।'
গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকে ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন সংখ্যা ১৫১টি। সিপিএম ৯২টি আসনে মনোনয়ন জমা দেয়। দু'জন মনোনয়ন তুলে নেন। ফলে ওই ব্লকে সিপিএম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ৯০টি আসনে। পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট আসন ২৪টি আসনের রয়েছে। এর মধ্যে সিপিএম মনোনয়ন জমা দিয়েছিল ২২টি আসনে। একজন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ২১টি আসনে তারা লড়াই করছে। জেলা পরিষদের মোট ৩টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সিপিএম। শাসকদলের চাপের মুখেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।