রোহিতের দাবি, পার্থে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পরে অশ্বিন তাঁকে অবসরের ভাবনা সম্পর্কে জানায়। তিনি অ্যাডিলেডের দ্বিতীয় টেস্টে অশ্বিনকে মাঠে নামতে রাজি করান। যদিও অ্যাডিলেডের দ্বিতীয় টেস্ট খেলেই অবসর ঘোষণা করেননি অশ্বিন। তিনি ব্রিসবেনের তৃতীয় টেস্টের প্রথম একাদশে সুযোগ না পেয়ে শেষমেশ সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
অশ্বিন চাইলে অ্যাডিলেড টেস্ট খেলা জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখার কথা জানিয়ে দিতে পারতেন। তাহলে ব্রিসবেন পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন কেন, সেই বিষয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কেনই বা বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির মাঝে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন রবি, ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে এমন প্রশ্ন জাগাও অস্বাভাবিক নয়।
চাইলে অনায়াসে কয়েক বছর টেস্ট ক্রিকেট চালিয়ে যেতে পারতেন অশ্বিন। ঘোর সমালোচকও এমন সংশয় প্রকাশ করতে পারবেন না যে, রবিচন্দ্রন ফর্মে ছিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে অশ্বিনের অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মাঝে হঠাৎ করে অবসর নেওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলি খতিয়ে দেখা যাক।
প্রথমত, অশ্বিন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জাতীয় দলে সুযোগ পেতেন না। কোচ গৌতম গম্ভীরের জমানায় হঠাৎ করেই টেস্টেও কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। গম্ভীর অশ্বিনের বদলে প্রাধান্য দিতে থাকেন ওয়াশিংটন সুন্দরকে। সুতরাং, অশ্বিনের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না যে, টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁর বিকল্প খুঁজছে।
দ্বিতীয়ত, চলতি বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে অশ্বিন ফের মাঠে নামার সুযোগ পাবেন কিনা, সেই বিষয়ে সংশয়ে থাকা স্বাভাবিক ছিল তাঁর। কেননা টিম ম্যানেজমেন্ট তিন স্পিনারকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ১টি করে ম্যাচে মাঠে নামিয়েছে। ব্রিসবেনে রবীন্দ্র জাদেজা বড় রান করে দেওয়ায় বাকি সিরিজে তাঁর মাঠে নামা যে কার্যত নিশ্চিত, সেটা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না।
তৃতীয়ত, এমনিতেই বিদেশে টেস্ট খেলা হলে অশ্বিনের থেকে অগ্রাধিকার দেওয়া হতো জাদেজাকে। ভারত যদি মেলবোর্ন বা সিডনিতে জোড়া স্পিনারে মাঠে নামে, তা হলেও জাদেজার সঙ্গে সুন্দরের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল। তাই অকারণে দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে রাজি হননি তিনি। তাঁকে দলের প্রয়োজন নেই বুঝেই সসম্মানে সরে যাওয়া মনস্থির করেন রবি।
সর্বোপরি, অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মাত্র ১টি ম্যাচে সুযোগ পাওয়ার পরে যদি পরবর্তী টেস্ট সিরিজের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়তে হতো, সেক্ষেত্রে মাথা হেঁট করে সরে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না অশ্বিনের সামনে। সুতরাং, সময় থাকতে মাথা উঁচু করে বিদায় নেওয়াই শ্রেয় মনে হয় অশ্বিনের।