ভারতে মহিলা ক্রিকেটাররাও পুরুষ ক্রিকেটারদের সমান সম্মান পাচ্ছেন। এমন অবস্থায়, বিসিসিআইও মহিলা খেলোয়াড়দের প্রচারের জন্য মহিলা প্রিমিয়ার লিগ শুরু করেছে। বর্তমানে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের তারকা খেলোয়াড় জাসিয়া আখতার ভারতীয় ক্রিকেটের বড় নাম হয়ে উঠেছেন। তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, তিনি সন্ত্রাসীদেরও মোকাবিলা করেছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক কে জসিয়া আখতার।
মহিলা টিম ইন্ডিয়ার তারকা খেলোয়াড় জাসিয়া আখতার তাঁর সংগ্রামের গল্প সকলের কাছে প্রকাশ করেছেন এবং নিজের লড়াই গল্প সকলের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। আসলে, উইমেনস প্রিমিয়ার লিগের ফ্র্যাঞ্চাইজি দিল্লি ক্যাপিটালস একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছে, যেখানে জাসিয়া আখতার তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারের গল্প বর্ণনা করছেন। জাসিয়া আখতার বলেছেন যে তিনি টেনিস বল দিয়ে ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন। দিল্লি ক্যাপিটালসের শেয়ার করা ভিডিয়োতে জাসিয়া বলেছেন, ‘এটা আমার বাবার স্বপ্ন। আমার বাবা আমাকে ক্রিকেট খেলতে বলেছিলেন কারণ আমার বাবা শিক্ষিত নন। তিনি শুধু আমাকে বলেন যে আপনি আমাকে গর্বিত করে তোলেন যে লোকেরা বলে আপনার মেয়ে ক্রিকেট খেলে এবং আমরা তাকে টিভিতে দেখি। আমার বাবা যদি আমার পাশে না দাঁড়াতেন তাহলে আমি আজ এখানে থাকতাম না।’
মহিলা খেলোয়াড় জাসিয়া আখতার জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা এবং এমন পরিস্থিতিতে তিনিও সন্ত্রাসীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন যে ২০০৫ সালে দুই থেকে তিনজন সন্ত্রাসী তার বাড়িতে ঢুকে তাঁকে চড় মেরেছিল। জাসিয়া আখতার বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমাকে দুবার চড় মেরেছে এবং তাঁর দুটো দাঁত ভেঙে দিয়েছিল। এ ছাড়া তারা আমার কপালে AK-47 বন্দুক রেখেছিল এবং সন্ত্রাসীরা বলেছিল যে তারা সব গুলি আমার মাথায় করবে।’
তার পর সে বাবাকে বলছিলেন, জীবন না থাকলে কী করে ক্রিকেট খেলব। তিনি আরও জানান, ২০১১ সালে একজন প্রধান এসে জসিয়াকে উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর ২০১২ সালে জাসিয়া আবার ক্রিকেট শুরু করেন। তিনি বলেন, তিনি সকলকে বলতে চান কেউ যেন হাল ছেড়ে না দেয়। একদিন জীবন সবাইকে পরিশ্রমের ফল দেয়।
দিল্লি ক্যাপিটলসের প্রকাশ করা ভিডিয়োতে জাসিয়া আখতার বলেন, ‘সবাই কাশ্মীর সম্পর্কে জানে, কিন্তু আমি যে এলাকায় থাকি সেটি সবচেয়ে বিপজ্জনক। আমি দক্ষিণ কাশ্মীরে থাকি, যেখানে বছরের পর বছর কারফিউ বলবৎ থাকে। সবকিছু বন্ধ থাকে। মাঠও নেই। কিন্তু আমাদের একটা বারান্দা ছিল যেখানে আমরা মাদুর বিছিয়ে দিতাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘একদিন মাদুরটা সরিয়ে দেখি একটা কাঠের ব্যাট পড়ে আছে। আমি বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম এটা কি, উনি বললেন এটা কোথায় পেলাম, এটা একটা ব্যাট। আপনি যখন বড় হবেন তখন এটি নিয়ে খেলবেন। এর পর ভাইকে বললাম যে আমি ব্যাট পেয়েছি। তারপর প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মাঠে যেতাম ক্রিকেট খেলতে। কারণ আমরা বাবাকে বলতে চাইনি।’