তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘আদানি গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে একটি বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় অন্য গোষ্ঠী এগিয়ে আসার জন্য অপেক্ষায় নেই। যদি তারা করতে পারেন, ভাল। যদি তারা করতে না পারে বা যদি কোনও জটিলতা তৈরি হয়, তাহলে রাজ্য সরকার বিকল্প পথে যাবে।’
ফাইল ছবি: পিটিআই, টুইটার
আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে ধস। আর তাই নিয়ে তোলপাড় রাজনীতি। আদানি গ্রুপের হাতে থাকা বেশ কিছু সরকারি প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আর তাতে বাদ নেই পশ্চিমবঙ্গও। বাংলার শিল্পে বড় বিনিয়োগ করার কথা আদানি গোষ্ঠীর। গৌতম আদানি নিজেই এসেছিলেন নবান্নে। দেখা করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। নিউ টাউনের ইকো পার্কে গৌতম আদানির ছেলে কিরণ আদানির হাতে তাজপুর বন্দরের কাজ শুরুর অনুমতিপত্র তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দেখুন সেই ছবি: তাজপুর বন্দরের নথি আদানির হাতে তুলে দিলেন মমতা, বিজয়াতে শিল্পদিশা
বৃহস্পতিবার এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একেবারে মমতা-আদানি সাক্ষাত্পর্বের ছবি নিয়ে হাজির হন সাংবাদিকদের সামনে। সেই ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, 'আমি কোনও মন্তব্য করব না। সমঝদারো কে লিয়ে ইশারা হি কাফি হ্যায়।'
এরপরেই তাজপুর বন্দরের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, 'তাজপুরের কী হবে? দেউচা পাচামির পাথর কে কিনবে? ইলেকটোরাল বন্ড কী করে আসবে?'
তাজপুরে বন্দরের প্রকল্প আদৌ হবে তো? বৃহস্পতিবার সংবাদসংস্থা ANI-এর সামনে সেই প্রশ্নই তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, 'আমরা সবাই জানি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর (আদানি) সঙ্গে একটা গোপন আঁতাঁত করেছিলেন। আমি তাজপুর বন্দর নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। ২৫,০০০ কোটি বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। ১০ লাখ চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতির এবার কী হবে?'
পাল্টা যুক্তি কুণালের
আদানি-মমতার ছবির সঙ্গে এই শেয়ার বাজার বিতর্কের যোগ কী? এদিন পাল্টা প্রশ্ন করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, 'আদানির সঙ্গে কি নরেন্দ্র মোদীর ছবি নেই? যাঁরা গেশের প্রথম সারির শিল্পপতি, তাঁদের সঙ্গে যেমন দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি রয়েছে, তেমনই অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও ছবি রয়েছে।'
গৌতম আদানি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি, টুইটার
তিনি যুক্তি দেন, বাংলায় বিনিয়োগের পরিবেশ রয়েছে। সেই কারণে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আদানির ছবি থাকতেই পারে। তিনি বলেন, 'শিল্পগোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ কোনও বিতর্ক নিয়ে যদি কেউ তাঁর সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি জড়িয়ে কিছু বলেন, তাহলে তিনি বদ্ধ পাগল ছাড়া আর কিছু নন।'
রামনগর–২ ব্লকের দাদনপত্রবাড়, দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর এবং অরক বনিয়া মৌজার হাজার একরের মতো জমি আদানি গোষ্ঠীকে দেওয়া হবে।
এর আগে সেপ্টেম্বরে এই বিষয়ে ঘোষণা করেছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানিয়েছিলেন, এই বন্দর নির্মাণ হলে এখানে ২৫ হাজার কর্মসংস্থান হবে। তাজপুরে এই গভীর সমুদ্রবন্দরটি নিয়ে রাজ্যের প্রস্তাব অনেক দিনের। কিন্তু কেন্দ্র-রাজ্য টালবাহানায় তা আটকে ছিল। অবশেষে রাজ্য জানায় তারাই এই বন্দরের জন্য জমি দেবে।