করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় অধিকাংশ চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ ছিল। তাই সেই সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে টেলিমেডিসিন পরিষেবা চালু হয়েছিল। তাতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এবার টেলিমেডিসিন পরিষেবার ক্ষেত্রে দেশের সমস্ত রাজ্যকে পিছনে ফেলে শীর্ষ স্থান দখল করে নিল পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প ‘ই সঞ্জীবনী’তে শীর্ষে রয়েছে বাংলা। শুধু তাই নয়, রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে চালু করা টেলিমেডিসিন পরিষেবা ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’- এও মিলেছে ব্যাপক সাড়া। আর এই পরিষেবার সুবিধাভোগীদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন মহিলারাই।
আরও পড়ুন: মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় টেলিমেডিসিন পরিষেবা, চালু করলেন মুখ্যমন্ত্রী
কেন্দ্র সরকারের তথ্য অনুযায়ী, সঞ্জীবনীতে তামিলনাড়ু, কেরল, কর্ণাটকের মতো স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নত রাজ্যও বাংলার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। ২০২১ সালের অগস্টে এই পরিষেবা চালু করা হয়েছিল।পরিসংখ্যান বলছে, গত জুন পর্যন্ত ৪ কোটি ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই পরিষেবা পেয়েছেন। জুন মাসের পরিসংখ্যানের হিসেবে, টেলিমেডিসিনে ডাক্তার দেখানোর শীর্ষে যে সমস্ত জেলা এবং স্বাস্থ্য জেলাগুলি রয়েছে সেগুলি হল- কালিম্পং, রামপুরহাট, মুর্শিদাবাদ এবং পূর্ব বর্ধমান। যদিও দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং বীরভূমে এই পরিষেবা খুব একটা সন্তোষজনক নয়।
অন্যদিকে, স্বাস্থ্যইঙ্গিত টেলিমেডিসিন প্রকল্পে প্রতিদিন ১ লক্ষ করে রোগী দেখা হচ্ছে। সংখ্যাটা স্বাভাবিকভাবেই অনেকটাই বেশি। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের মতে স্বাস্থ্য ইঙ্গিত প্রকল্পের ক্ষেত্রে মহিলারাই বেশি এগিয়ে। এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীর মধ্যে রয়েছেন ৬৩ শতাংশ মহিলা, আর বাকি ৩৭ শতাংশ পুরুষ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাঝ বয়সি মানুষের ক্ষেত্রে এই পরিষেবার সুবিধা নেওয়ার প্রবণতা বেশি। স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, ৩৬ থেকে ৫৯ বছর বয়সি মানুষের মধ্যে সুবিধা নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তবে কলকাতায় ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সিদের মধ্যে এই সুবিধা নেওয়ার প্রবণতা বেশি। সাধারণত সরকারি হাসপাতাল, বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, প্রাথমিক এবং পুরও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে সেই সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি। দেখা যাচ্ছে, প্রত্যন্ত এলাকার দিকে এই পরিষেবা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এবার শহরাঞ্চলে এই পরিষেবার জনপ্রিয়তা বাড়ানোর ওপর জোর দিতে চাইছে রাজ্য।