আর তিনদিন পরই নতুন বছর ২০২৫। আর নতুন বছরই রাজ্যের মন্ত্রীদের নয়া ফরমান মেনে চলতে হবে। সেই ফরমান জারি করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন মন্ত্রী কোন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন সেটা আগে থেকে জানাতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত মিললে তবেই সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানে বা সভা, সমাবেশে যাওয়া যাবে। না হলে তা বাতিল করতে হবে। রাজ্য মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের উদ্দেশে এই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রীদের সেখানে যাওয়া উচিত হবে কিনা সেটা খতিয়ে দেখবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। তার পরই মিলতে পারে অনুমোদন। আবার নাও মিলতে পারে।
নবান্ন সূত্রে খবর, এই ফরমান জারি করা হয়েছে বাস্তবের দিকে তাকিয়ে। কদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে এক মন্ত্রী যোগ দেন। আর সেটা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। যা কানে আসে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর। সংশ্লিষ্ঠ অনুষ্ঠান মঞ্চে মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেন একাধিক আর্থিক দুর্নীতি ও প্রতারণার মামলা থাকা ব্যক্তি। সেটা চাউর হয়ে যায় ছবি–সহ। যা রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে তোলে। তারপরই দু’দিন আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করেন ওই মন্ত্রী এবং তাঁর বাকি সতীর্থদের। তারপরই এমন সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। আর জারি হয়ে যায় এমন ফরমান। এই ফরমান নতুন বছর থেকেই কার্যকর করা হবে।
আরও পড়ুন: ‘মধ্যাহ্নভোজের সময় তিনি আসতেন’, মনমোহন সিংয়ের স্মৃতিচারণে মুম্বইয়ের এক দোকানি
মন্ত্রীরা যদি ভুল করে তাহলে তা জনমানসে প্রভাব ফেলে। সেটা একদমই করা যাবে না। কারণ ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন রয়েছে। রাজ্য সরকার উন্নয়নের কাজ ব্যাপক হারে করেছেন। তাই আরও বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসতে চান মুখ্যমন্ত্রী। যা কেন্দ্রীয় সরকার করতে পারেনি সেটাই করে দেখিয়েছে রাজ্য সরকার। মানুষের হাতে অর্থ তুলে দেওয়া থেকে একাধিক সামাজিক প্রকল্প এনে রাজ্যের মানুষের জীবনে একটা নিশ্চয়তা এনেছেন। তাই মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য যাতে কোনও বিতর্কে জড়িয়ে না পড়েন তাই এই ফরমান জারি করা হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোনও ‘অস্বস্তিকর’ পরিস্থিতি তৈরি হোক চান না মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ থেকে স্পষ্ট কোনও অন্যায়–অপরাধ তিনি বরদাস্ত করবেন না। আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী টিকিট পাবেন না। আর দলের যে গাইডলাইন আছে সেটা মেনে চলতে হবে বাকি বিধায়ক থেকে শুরু করে সাংসদ এবং নেতা–কর্মীদের। তাঁদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটতে পারে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে খুব ঝাড়াই–বাছাই করে টিকিট দেওয়া হবে। বাদ পড়তে পারেন একাধিক হেভিওয়েট নেতা–মন্ত্রী। ভাবমূর্তি যাতে ‘স্বচ্ছ–উজ্জ্বল’ থাকে তাই এই ফরমান জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর।