কয়েক মাস আগের কথা। দেনার দায়ে আত্মহত্যার পথকে বেছে নিয়েছিল ট্যাংরার দে পরিবার। এই পথে হেঁটে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকেই খোয়াতে হয়। বেঁচে যায় দে ব্রাদার্স এবং তাদের এক ছেলে। যার চিকিৎসা চলছিল এনআরএস হাসপাতালে। ওই কিশোরের এখন খবর কী? মাকে হারিয়ে হাসপাতালের নার্স–আয়াদের স্নেহ পেয়েছিল ১৪ বছর বয়সের প্রতীপ। দু’মাস সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলেছে ওই কিশোরের। তাই নার্স–আয়াদের কাছে পেয়েছিল মায়ের স্নেহ। এবার হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার সময় তার চোখে জল চলে এল। কারণ এখন আর মায়ের মতো স্নেহ কেউ করবে না। বরং কেউ বলতে পারে খুনির ছেলে।
এই আশঙ্কা কাজ করছে ১৪ বছরের কিশোরের মধ্যে। এনআরএস হাসপাতাল থেকে তাই তার যেতে ইচ্ছে করছিল না। প্রতীপের দু’চোখ বেয়ে জল পড়ছিল এই হাসপাতাল ছাড়ার সময়। কারণ এই বয়সে তো তার স্নেহ–ভালবাসা পাওয়ার কথা। সেখানে তার আজ কিছু নেই। কেউ নেই। নার্স–আয়া দিদিদের তবু পেয়েছিল সে। যা ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। আসলে সরকারি হাসপাতাল তো কারও স্থানীয় ঠিকানা হতে পারে না। চিকিৎসক, নার্স–আয়াদের কাছ থেকে যাওয়ার আগে কেঁদে ভাসাল প্রতীপ। কারণ এখন তার ঠিকানা বেসরকারি হোম। তাই তো প্রতীপের চোখ জল দেখে নার্স–আয়ারা বললেন, ‘মন দিয়ে লেখাপড়া করিস। ভাল থাকিস বাবা।’
আরও পড়ুন: নাবালিকার স্তন চেপে ধরা পকসো আইনে ধর্ষণের চেষ্টা নয়, জানাল কলকাতা হাইকোর্ট
তারিখটা ছিল ১৯ ফেব্রুয়ারি। সময় রাত ৩টে। অভিষিক্তার মোড়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছিলেন প্রণয় দে, তাঁর পুত্র প্রতীপ ও প্রণয়ের ভাই প্রসূন দে। তখনই আসল ঘটনা সামনে আসে। পরে উদ্ধার হয় ট্যাংরার বাড়িতে পড়ে থাকা পরিবারের তিনজনের দেহ। স্ত্রী রোমি এবং বৌদি সুদেষ্ণাকে খুন করা হয়। আর মেয়ে প্রিয়ম্বদাকে পায়েসের মধ্যে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে খুন করা হয়। সবটাই করেছিলেন প্রসূন দে বলে অভিযোগ। আর্থিক অনটন ও বিপুল ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পেতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছিল।