পুজো শেষ হতেই তৎপর ইডি। আজ সকাল থেকেই রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে ৮টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে ইডি। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের বাড়ি থেকে শুরু করে তাঁর আপ্তসহায়ক অমিত দে-র নাগেরবাজারের ফ্ল্যাটেও পৌঁছে গিয়েছে ইডি। এদিকে বকিবুর ঘনিষ্ঠ অভিষেক বিশ্বাসের বাড়িতেও হানা দিয়েছে ইডি। এই অবিষেক বকিবুরের শ্যালক বলে জানা গিয়েছে। তাঁর বাড়ি চিনার পার্কে। অভিষেক এবং বাকিবুরের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি জানতে পেরেছে, তাঁদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বকিবুর কয়েক কোটি টাকার লেনদেন করেছিল।
এদিকে আজ সকালে সল্টলেকের বিসি ব্লকে জ্যোতিপ্রিয়র পাশাপাশি দু’টি বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রের খবর, রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারের পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পরেই রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম উঠে আসে। এই আবহে মন্ত্রীকে জেরা করতে এবং তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী সমেত সাতসকালে পৌঁছে যায় ইডি। রেশন কেলেঙ্কারি নিয়েই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে বকিবুরের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়র যোগসূত্রের খোঁজ চলছে।
এর আগে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। তবে সেই অভিযান ছিল পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সূত্রে। পরে পুর নিয়োগ মামলার তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা জানতে পারেন রেশন দুর্নীতি কাণ্ডেও ব্যাপক টাকা নয় ছয় হয়েছে। এই আবহে বাকিবুরের কৈখালির ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। সেখান থেকে ১০০-র বেশি সরকারি দফতরের স্ট্যাম্প উদ্ধার করেছিল ইডি। পরে দীর্ঘক্ষণ জেরার পর বকিবুরকে গ্রেফতার করে ইডি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বাকিবুর রহমানের অন্তত ১০০ কোটির সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে। নামে, বেনামে, আত্মীয়দের নামে এই বিপুল সম্পত্তি। এগুলি রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জন্য করা হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, অন্তত ৬টি সংস্থায় শেয়ার রয়েছে বাকিবুরের। সেই শেয়ার মিলিয়েই বাকিবুরের সম্পত্তি প্রায় ৫০ কোটি। নিউ টাউন, রাজারহাট, পার্কস্ট্রিটে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে তার। বাকিবুরের একাধিক হোটেল, পানশালাও রয়েছে। বিদেশেও তার সম্পত্তি রয়েছে বলে খবর।
আর রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর বার বার উঠে এসেছে জ্যোতিপ্রিয়র নাম। কয়েকদিন আগেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেছিলেন, রেশন কেলেঙ্কারিতে জড়িত বর্তমান ও প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। সুকান্ত সেই সময় দাবি করেছিলেন, রাজ্যের প্রচুর ব্যবসায়ী পিডিএসের চাল ঘুরপথে অন্য জায়গায় পাচার করে। এই চক্রের সঙ্গে নাকি বর্তমান এবং প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জড়িত। সুকান্ত দাবি করেছিলেন, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র এলাকায় নাকি পিডিএসের চাল বহনকারী ২০০ ট্রাক ধরা পড়েছিল। শুভেন্দু অধিকারীও জ্যোতিপ্রিয়র দিকে আঙুল তুলেছিলেন এই নিয়ে। এমনকী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়েকে জন্মদিনে বাকিবুর স্করপিও গাড়ি উপহার দিয়েছেন বলেও দাবি করেছিলেন শুভেন্দু।