দিনকয়েক আগে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করতে ফুরফুরা শরিফে গিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী ও আবদুল মান্নান। আব্বাস সিদ্দিকি, ইব্রাহিম সিদ্দিকির সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হলেও ত্বহা সিদ্দিকির দেখা পাননি অধীররা। এবার নবান্নে গিয়ে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি। মঙ্গলবার এক প্রতিনিধি দল নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। একগুচ্ছ দাবিদাওয়া সম্বলিত একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।পরের বছর এপ্রিল–মে মাস নাগাদ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে সংগঠন গুছিয়ে নিতে শুরু করেছে রাজ্যের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল। ৭ ডিসেম্বর থেকে জেলায় জেলায় প্রচার শুরু করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার মাঝেই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক কোন শিবিরে যাবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। তাই এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ত্বহা সিদ্দিকির বৈঠক ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা।এদিন স্মারকলিপিতে ত্বহা সিদ্দিকি ও তাঁর প্রতিনিধিদের তরফে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ৭০ থেকে ৮০টি মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। স্মারকলিপিতে আরও দাবি, সংখ্যানুপাতে চাকরিতে মুসলিমদের সংরক্ষণ দিতে হবে। ফুরফুরা শরিফে পীর আবুবক্কার সিদ্দিকির নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ দ্রুত শুরু করার অনুরোধ করা হয়েছে।স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ সাত বছর মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ। তার জেরে মাদ্রাসাগুলিতে পঠন–পাঠন বন্ধের মুখে। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত জট কাটিয়ে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অভিযোগ, শিক্ষা ও চাকরিতে মুসলিম ওবিসিদের যে সংরক্ষণ ঘোষণা হয়েছে বাস্তবে তার সুবিধা ছাত্রছাত্রী ও চাকরিপ্রার্থীরা পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে একটি মনিটারিং কমিটি গঠন করার অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁদের আরও অনুরোধ, সকস ইমাম মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের জন্য নিজ ভূমি নিজ বাড়ি–সহ তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।এদিকে, ফুরফুরা শরিফের কিছু অসম্পূর্ণ কাজ ও নতুন কিছু কাজ করে দেওয়ার দাবি করা হয়েছে স্মারকলিপিতে। যেমন, ২৯টি ওজুখানার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা, হাসপাতালে ৩০ বেডের নতুন ভবনে জাক্তার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ, ফুরফুরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সিএমসি–র পানীয় জল সরবরাহ, ফুরফুরা শরিফের গেস্ট হাউসে বেড–সহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। এছাড়া ফুরফুরা শরিফে নতুন ৫টি হাইমাস্ট লাইট, ৫টি শাইনএজ গেট, পানীয় জলের রিজার্ভার, হাইড্রেনেজ ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে।