আজ, রবিবার থেকে বিসর্জনের পালা বাড়বে গঙ্গার ঘাটে। গতকাল গঙ্গার ঘাটে বিসর্জনের সময় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান উঠেছিল। তারপর থেকেই সতর্ক হয়ে গিয়েছে কলকাতা পুলিশ। কারণ দুর্গাপুজোর ভাসানের সঙ্গে এই স্লোগান যায় না। তাতে উস্কানি তৈরি হয়। এই আবহে অনিকেত মাহাত, অলোক ভার্মা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনশন করতে গিয়ে। আরজি কর হাসপাতালের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে আমরণ অনশন চলছে। আর তার জেরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তিনজন জুনিয়র ডাক্তার। ধর্মতলার ধরনা মঞ্চে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন আরও ৬ জন জুনিয়র ডাক্তার।
এদিকে একাদশীর দিনেও অনশন আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাতে যাতায়াতের পথে যানজটের সৃষ্টি হবে। কলকাতা পুলিশ ট্রাফিক সচল রাখতে সব ব্যবস্থা করছে। সাধারণ মানুষকে একবেলা অরন্ধনের আহ্বান করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এবার রাত দখলের সংগঠকরা নতুন এক কর্মসূচি শুরু করে দিলেন। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘রাতের মিটিং’। এই বিষয়ে সংগঠনের অন্যতম সদস্য প্রিয়স্মিতা বলেন, ‘আমরা একটা গতি চাইছি। মেয়েরা মেয়েদের কথা খুলে বলবেন। মেয়েদের নানা সমস্যার কথায় আমরা পরস্পরকে আরও ভাল করে বুঝতে পারব। তার মধ্যে দিয়ে নতুন দাবিও উঠে আসবে। সেটা একটা মিটিংয়েই সম্ভব। এই ভাবনা থেকেই আমাদের রাতের মিটিং।’
আরও পড়ুন: পুলিশ–কলকাতা পুরসভা এককাট্টা বিসর্জন ঘাটে, নজরদারি–পরিষ্কার চলবে জোরকদমে
অন্যদিকে এই রাতের মিটিং এখন শহরে হলেও তা জেলায় জেলায় ছড়িয়ে দিতে চান তাঁরা। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন রবীন্দ্র সদন এলাকায় অ্যাকাডেমির সামনে এবং শ্যামবাজার চত্বরে মেয়েদের নিয়ে ‘রাতের মিটিং’ শুরু করেছেন তাঁরা। টালা এলাকার বাসিন্দা চৈতালি বণিক। আবার এই সংগঠনের সদস্যও। রাতের মিটিং নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘রাতের মিটিংয়ে মেয়েরা তাঁদের নিজেদের নানা সমস্যার কথা খুলে বলেছেন। তবে আরও কয়েকটি এলাকায় এই ধরনের মিটিং করতে পারলে মহিলাদের মধ্যে সাহস বাড়বে। কারণ রাতের অধিকার যতটা পুরুষের ততটাই অধিকার মেয়েদের।’
এছাড়া সূর্য অস্ত গেলে তার পর থেকেই চলবে রাতের মিটিং। একটা ক্লাব তৈরি করার পরিকল্পনাও চলছে। সেটা হবে সম্পূর্ণ মেয়েদের ক্লাব। আবার গড়ে উঠতে পারে মেয়েদের চায়ের দোকান। সেখানে শুধু মেয়েরা থাকবেন বলে সূত্রের খবর। তবে প্রিয়স্মিতার কথায়, ‘ভারতে ধর্ষণের পরিসংখ্যান বলছে, শুধু রাতেই অপরাধ হয় না। তবে রাতে একটা ভয় কাজ করে। মেয়েরা যাতে ভয়হীন রাত পেতে পারে সেটার লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি। থ্রেট কালচারের সঙ্গে রেপ কালচার ওতপ্রতভাবে জড়িত। তাই দুটোর বিরুদ্ধেই লড়াই জারি রাখতে হবে।’