বর্ষা পুরোপুরি পা রেখেছে বাংলায়। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে রাজ্যের একাধিক নদী। তারওপর ডিভিসির লাগাতার জল ছাড়ার ফলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে একাধিক জেলায়। সেই কথা মাথায় রেখে রাজ্যের মুখ্যসচিব পশ্চিমাঞ্চলের জেলাশাসকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করলেন। জেলার প্রশাসনকে সতর্কবার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, বিপদ এড়াতে এখনও সময় আছে, তাই প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই। (আরও পড়ুন: ট্রেনে সংরক্ষিত আসনের টিকিট কাটার নিয়মে বড় বদল, কী জানাল রেল?)
আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ড থেকে বাড়ছে চাপ, জল ছাড়ছে DVC, জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করল রাজ্য
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, নিম্নচাপের প্রভাবে আপাতত বৃষ্টিপাত চলবে। মৌসুমী অক্ষরেখা ও নিম্নচাপে জেরেই চলছে বৃষ্টি।এই অবস্থায় নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু হয়েছে।এরমধ্যে মাইথন থেকে ২০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ১৭ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু করেছে ডিভিসি। তার জেরে বিভিন্ন এলাকায় জল ঢুকেছে। প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে উপকূলবর্তী নদী ও নিচু অঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো ছাড়া আর উপায় নেই। (আরও পড়ুন: ইউনুস প্রশাসনে ভরসা নেই? বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর বড় বয়ানে উঠল প্রশ্ন)
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে আসানসোলের বহু এলাকা জলমগ্ন। বরাকর নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ঝনপুরা, কবরস্থানমহল্লা, ফাঁড়িরোডসহ একাধিক জায়গায় আচমকাই ঘরে ঢুকে পড়েছে জল। বহু পরিবার বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। একইসঙ্গে ঘটেছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাও। আসানসোল পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জামুরিয়া বাকশিমুলিয়ায় একটি কাঁচা বাড়ির দেওয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে উমাপদ মণ্ডল (৬৭) নামে এক বৃদ্ধের। ঘটনার সময় তিনি বাড়ির ভিতরে ছিলেন। ভাঙা দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। (আরও পড়ুন: ভারত সীমান্ত নিয়ে বড় বার্তা বাংলাদেশ সেনার,শোনা গিয়েছিল সংঘাতের ষড়যন্ত্রের কথা)
আরও পড়ুন: ইউনুস জমানায় সুইস ব্যাঙ্কে বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৩৩ গুণ!
অন্যদিকে, বাঁকুড়ায় দ্বারকেশ্বর নদীতে হঠাৎ জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকে আটকে পড়ে প্রায় ১০-১২টি ট্রাক। জল বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন চালক ও স্থানীয় মানুষ। খবর পেয়েই প্রশাসন উদ্ধারকাজ শুরু করে। কয়েকটি ট্রাক ইতিমধ্যেই সরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক জেলায় বৃষ্টির জেরে যে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা আগেভাগেই আঁচ করেছে নবান্ন। তাই বিপর্যয়ের আগে সচেতন হওয়ার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদীপাড়ের এলাকা ও জলবন্দি অঞ্চলগুলি খতিয়ে দেখতে। প্রয়োজন পড়লে স্থানীয় মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও রাখতে বলা হয়েছে।