হঠাৎই চাঞ্চল্য দেখা গেল কলকাতা বিমানবন্দরে। ঘন ঘন ওয়াকিটকিতে চলছে কথোপকথন। কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। এত ব্যস্ততা কিসের? বিমানবন্দরের এক কর্মীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘ফোন এসেছিল।’ কার ফোন? কী বিষয়ে ফোন? কিছুই যেন বলার মতো সময় নেই তাঁর কাছে। সিআইএসএফ জওয়ানদের দৌড়াদৌড়িতে মনে হল, বোমাতঙ্কের ফোন এসেছিল বোধহয়। কিন্তু শেষে জানা গেল, ‘লিও’ নামে একটি বিড়াল হারিয়েছে। আর তা নিয়েই যত তৎপরতা।ঠিক কী ঘটেছে? বিমানবন্দর সূত্রে খবর, গঙ্গানগরের বাসিন্দা সোয়ানী দে’র পোষ্য বিড়াল হারিয়ে গিয়েছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি করে পাননি পরিবারের সদস্যেরা। অবশেষে জানা যায়, ঘাসে আটকে পড়েছে লিও। গঙ্গানগরে বিমানবিহারী আবাসন বিমানবন্দরের পাঁচিল লাগোয়া। এখানের বাড়ির ছাদ থেকে পাঁচিলের ভিতর পড়ে গিয়েছে লিও। আর বেরোতে পারছে না। তাই ব্যস্ততা।এই বিষয়ে সোয়ানী বলেন, ‘আমরা জানতে পারি লিও বিমানবন্দরের এলাকার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। তখন নিকটবর্তী ওয়াচ টাওয়ারে বিষয়টি জানাই। গিয়ে বলি, লিও পড়ে গিয়েছে। আপনারা বাঁচান। সেখান থেকে একজন সিআইএসএফ জওয়ান আসেন এবং চেষ্টা করেন লিওকে উদ্ধার করার। যদিও তা সম্ভব হয়নি। তারপর আমরা সিআইএসএফ–এর পাঁচ নম্বর গেটে যাই। কিন্তু সেখান থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে বলা হয়, কিছু পেলে যোগাযোগ করা হবে।’ এই নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন সোয়ানী। টুইটারেও একটি পোস্ট করেন। এরপর কেটেছে উৎকন্ঠায়। মাঝরাতে দেড়টা নাগাদ সিআইএসএফের একটি গাড়ি আসে পাশের এলাকায়। তখনও অবশ্য প্রিয় পোষ্যকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুক্রবার এক সিআইএসএফ আধিকারিক ফোন করেন। তিনি জানান, এয়ারপোর্ট ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে। সেখানে গিয়ে একটি আবেদনপত্র লিখতে হয়। লিও’র ছবি–সহ সেই আবেদন পত্র ছড়িয়ে দেন তাঁরা।কিভাবে উদ্ধার হল লিও? সোয়ানীর কথায়, ‘এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ তৎপরতা দেখাতে শুরু করেন। সেখানে পাস বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। বেলা ১২টা নাগাদ একটি গাড়িতে কয়েকজন সিআইএসএফ জওয়ান, এয়ারপোর্টের কর্মী ও আমরা বেরিয়ে পড়ি। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরের ঘাসে লুকিয়ে থাকা লিওকে খুঁজে পাই আমরা। এই ব্যবস্থা না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ না করলে লিওকে ফেরত পেতাম না।’ বিমাববন্দরের জেনারেল ম্যানেজার–অপরেশনস মনোজকুমার বেহরা বলেন, ‘আমরাও খুব খুশি হয়েছি লিও উদ্ধার হওয়ায়।’