মিড ডে মিলে হিন্দু আর মুসলিম ছাত্রদের হাঁড়ি আলাদা। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনই ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলি ১ নম্বর ব্লকের নাদনঘাট থানা এলাকা থেকে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০৫ সাল থেকে আলাদা রান্না হচ্ছে হিন্দু ও মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিল। একথা জানতে পেরে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক আয়েশা রানি।
জানা গিয়েছে পূর্বস্থলির কিশোরীগঞ্জ – মনমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ৭২। তার মধ্যে ৪৩ জন হিন্দু ও ২৯ জন মুসলিম পরিবারের। শিক্ষক শিক্ষিকা ৪ জন। সেখানে মিড ডে মিল রান্নার হেঁশেলে রয়েছে ২টি LPG ওভেন। তাতে আলাদা আলাদা রান্না হয় হিন্দু ও মুসলিম ছাত্রদের মিড ডে মিল। হিন্দু ও মুসলিম ছাত্রছাত্রীরা আলাদা জায়গায় বসে মিড ডে মিল খেতে। হিন্দু ছাত্রদের মিড ডে মিল রান্না করেন সোনালি মজুমদার। আর মুসলিম ছাত্রদের মিড ডে মিল রান্না করেন গেনো বিবি। শুধু ওভেন নয়, হিন্দু ও মুসলিম পড়ুয়াদের মিড ডে মিল রান্নার হাঁড়ি, হাতা - খুন্তু সবই আলাদা।
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কানন বর্মন জানিয়েছেন, মিড ডে মিল চালু হওয়ার পর থেকেই এই বিদ্যালয়ে এই প্রথা চলে আসছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ বলেন, ‘আমি বছরখানেক হল এখানে প্রধান শিক্ষক হয়ে এসেছি। এখানে বহু বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। এজন্য স্কুলকে বাড়তি খরচ বইতে হয়। ২ জায়গায় রান্না করতে প্রায় দ্বিগুন গ্যাস খরচ হয়। জিনিসপত্র আলাদা রাখতেও বাড়তি টাকা দিতে হয়। আমি অভিভাবকদের নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু অভিভাবকরা সহমত না হওয়ায় পারিনি।’
এই ঘটনায় মহকুমাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। সরকারি স্কুলে কী ভাবে ধর্মীয় বিভাজন চলতে পারে তার জবাব চেয়েছেন তাঁরা।