মাথার উপর চড়া রোদ। বাসে, ট্রেনে বাদুরঝোলা ভিড়। কিচ্ছু ভালো লাগছে না। একটু নির্জনতা খুঁজছেন? আপনার জন্য় আদর্শ জায়গা হতেই পারে উত্তরবঙ্গের যোগীঘাট। বাস্তবেই এতটাই নির্জন নিরিবিলি যে মেডিটেশনের অভ্যাস থাকলে এখানে তার উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। পারলে ফোনটাও মিউট করে রাখুন। দেখবেন স্বর্গের শান্তি।
রিয়াংখোলা নদীর ধারেই রয়েছে যোগীঘাট। দার্জিলিংয়ের যে অফবিট জায়গাগুলো নিয়ে ইদানিং খুব বেশি চর্চা হচ্ছে তার মধ্যে যোগীঘাট যথেষ্ট আনকোড়া। মানে অফবিটও এখন ক্রমে ঘিঞ্জি হতে শুরু করেছে। কিন্তু সে তুলনায় যোগীঘাট এখনও অনেকটাই ফাঁকা। পাহাড়, নদী, জঙ্গলের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। গরমকালেও আবহাওয়া যথেষ্ট মনোরম থাকে।
এখানকার উচ্চতা প্রায় সাড়ে তিন হাজার ফুটের কাছাকাছি। তার মাঝেই কার্শিয়াংয়ের ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। এই গ্রামটি মোটামুটি সিটং ২ খাসমহলের কিছুটা নীচের দিকে। আর ইদানিং ট্রাভেল ভ্লগের সৌজন্যে সিটং নামের সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। সিটং মানে কমলালেবু আর কমলালেবু।আর যোগীঘাট এলে আপনার সুবিধা হচ্ছে একদিকে কমলালেবুর বাগান আর অন্যদিকে সিঙ্কোনার বাগান দুটোই দেখতে পাবেন।
আর রিয়াং নদীর রূপ এককথায় অসাধারণ। পাথরে ধাক্কা খেয়ে বয়ে চলেছে রিয়াং খোলা নদী। কোথাও আবার পাহাড়ি ঝর্ণার রূপ নিয়েছে রিয়াং নদী। নদীর ধারে বড় বড় পাথর। সেই পাথরের উপর বসেই কাটিয়ে দিতে পারেন সারাটা দিন। কোথাও যেতে ইচ্ছে করবে না। মনের ভেতরে জমে থাকা মন খারাপগুলোকে ভাসিয়ে দিন রিয়াং নদীর জলে। এরপর যখন ফিরে আসবেন সমতলে তখন আপনি একেবারে অন্য মানুষ। সত্যি না গেলে বিশ্বাসই হয় না এত ম্যাজিক রয়েছে যোগীঘাটের।
নদীর ঝিরঝির শব্দ, তার সঙ্গে পাখির গান। মনে পড়ে যাবে, কে যেন আবীর ছড়িয়ে দিল ভোরেরও আকাশে…
এখানে বর্তমানে একটি লোহার সেতু তৈরি হয়েছে। পাশেই রয়েছে কাঠের ব্রিজ। ছবি তোলার জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা। তুরুক, মামরিং সব কাছাকাছি গ্রাম। ঘুরে আসতে পারেন। এখান থেকে গাড়িতে নামথিং পোখরি ঘুরে আসতে পারেন। সিটং, লাটপাঞ্চার,. বাগোড়া, চিমনি, কার্শিয়াং, মংপু সব একই দিনে গাড়িতে ঘুরে আসতে পারেন।
এনজেপি বাগডোগরা থেকে যোগীঘাট যাওয়ার গাড়ি পাবেন। রোহিনী রোড, কার্শিয়াং দিলারাম হয়েও যাওয়া যায়। আবার সেবক রোড, রম্ভি, মংপু, লাবদা হয়েও যেতে পারেন। একাধিক হোমস্টে রয়েছে এলাকায়। আগে থেকে বুক করে সেই হোমস্টে-তে চলে যেতে পারেন। এরপর গা এলিয়ে দিন দিন তিনেকের জন্য।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক