গত পাঁচ মাস ধরে বর্ধমান জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন শিলদা কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। পিএইচডির প্রবেশিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হতেই তাঁর মেধা নিয়ে বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছিল। জেলে বসেই তিনি পিএইচডির পড়াশোনা করছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়েও যাচ্ছিলেন। তবে গত বুধবার থেকে অনশন শুরু করেছেন এই মাওবাদী নেতা। প্রথমদিকে, তিনি শুধু চা বিস্কুট খাচ্ছিলেন। তবে এবার পুরোপুরি অনশন শুরু করে দিয়েছেন। যার ফলে একটানা অনশনে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছেন অর্ণব। তার শরীরের ওজনও কমেছে অনেকটাই। তা সত্ত্বেও টনক নড়ছে না জেল কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন: জেলের মধ্যেই অনশন শুরু করলেন মাওবাদী নেতা, অর্ণব দামের নয়া দাবি ঠিক কী?
জানা গিয়েছে, বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য একদিনের প্যারোলে বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন অর্ণব। তাঁর মায়ের বয়স ৭৬ বছর। তবে তিনি একাই বাড়িতে থাকেন। তার ওপর সম্প্রতি রাত ১টা নাগাদ অর্ণবের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সোনারপুর থানার পুলিশ। সেই সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে একদিনের প্যারোলে মুক্তি চেয়েছিলেন অর্ণব দাম। কিন্তু, জেল কর্তৃপক্ষ তার আবেদনে সাড়া দেয়নি। তাদের বক্তব্য, অর্ণব দাম এলাকায় গেলে অশান্তি হতে পারে। এই যুক্তি দেখিয়ে অর্ণব দামের আবেদন নাকচ করে দেয় জেল কর্তৃপক্ষ।
তারপরেই তিনি জেলের মধ্যে অনশন শুরু করেন। যার জেরে পিএইচডির পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে অর্ণবের। টানা অনশনে তার শরীরের ওজন কমেছে ৩ কেজি। প্রসঙ্গত, সোনারপুর পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছিল অর্ণব এলাকায় গেলে অশান্তি হতে পারে। তাই তারা অর্ণবের প্যারোলে আপত্তি জানিয়েছিল। এই বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে। কলকাতায় আইজি কারার অফিসে অর্ণবের জামিন চেয়ে আবেদন জানিয়েছে এপিডিআর। এবিষয়ে জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, সোনারপুর থানার পুলিশ অর্ণবের প্যারোল নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। এদিকে, রাত ১ টার দিকে অর্ণবের বাড়িতে যাওয়ায় সরব হয়েছিল এপিডিআর।
উল্লেখ্য, ২০১০ শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলায় ২৪ জন জওয়ান শহিদ হন। এই হামলার নেতৃত্ব দেন অর্ণব বলে অভিযোগ। এছাড়াও ৩১টি গুরুতর মামলা ছিল অর্ণবের বিরুদ্ধে। ২০১২ সালে আসানসোলে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়।মেদিনীপুর সংশোধনাগার থেকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে এসে ইগনু থেকে তিনি ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। দু’টিতেই ফার্স্ট ক্লাস পান এই মাওবাদী নেতা।