স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি করেছে স্বামীর বন্ধু বলে অভিযোগ। আর সেই সম্পর্ক শুধু ফোনে সীমাবদ্ধ ছিল না বলেও অভিযোগ। তাই স্ত্রী আর বন্ধুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে স্থায়ী ছেদ ঘটাতে বন্ধুকে ডেকে খুন করল স্বামী বলে অভিযোগ উঠেছে। হুগলি জেলার পোলবার মহানাদে এই ঘটনা প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায়। অভিযুক্ত স্বামীর নাম অভিজিৎ সরকার। মহানাদের বাসিন্দা সাগরিকা সরকারের সঙ্গে চার বছর আগে বিয়ে হয় নদিয়ার নবদ্বীপের অভিজিতের। তারপর স্বামীর বন্ধু রাজ বর্মনের সঙ্গে পরিচয় হয় সাগরিকার। তাঁদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যা নিয়ে অশান্তির সূত্রপাত। রবিবার রাতে সাগরিকার মহানাদের বাড়িতে যান রাজ। সেখানেই অভিজিৎ রাজকে ছুরি দিয়ে কোপ মেরে খুন করে বলে অভিযোগ।
এদিকে বন্ধুর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে স্ত্রী জানতে পেরে মেনে নিতে পারেনি অভিজিৎ। তাই সংসারে বিষয়টি নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ তুঙ্গে উঠেছিল বলে অভিযোগ। সেটাই চরম আকারে পৌঁছে গেল। বন্ধুকে ডেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ‘খুন’ করা হল রাজ বর্মনকে। তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী অভিজিৎ সরকারকে গ্রেফতার করেছে। অভিজিতের বন্ধু উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের বাসিন্দা রাজ বর্মন এবং সাগরিকা সরকারের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠতে বেশি সময় লাগেনি। ফোনালাপ থেকে ঘনিষ্ঠতা খুব দ্রুত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: পাঁশকুড়া–দিঘা স্পেশালকে নিয়মিত করা হোক, রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু কেন?
অন্যদিকে এই পরকীয়ার সম্পর্ক জানাজানি হতেই স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ বাড়তে শুরু করে। তুমুল অশান্তিও চলতে থাকে তাঁদের মধ্যে। রাজের সঙ্গে সাগরিকাকে যোগাযোগ রাখতে নিষেধ পর্যন্ত করেছিলেন অভিজিৎ। যদিও তা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে রাজের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন সাগরিকা বলে দাবি অভিজিতের। সাগরিকার মা কল্যাণী সরকার বলেন, ‘কদিন ধরে মেয়ে আমার কাছেই রয়েছে। জামাইয়ের বন্ধু হিসেবেই সাগরিকার সঙ্গে রাজের পরিচয় হয়। মেয়ে ফোনে কথা বললেই জামাই মারধর করত। রাজ কয়েকবার অভিজিৎকে আটকায়।’
এছাড়া বিবাদ মেটাতে রাজ বর্মন মহানাদ এলাকায় রবিবার একটি মন্দিরে কাছে যান। সেখানে তিনজনে আলোচনায় বসেন। আর সেখানেই সম্পর্কের কথা উঠে আসতেই রাজকে ধারালো ছুরি দিয়ে অভিজিৎ খুন করে বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে যায় রাজ। রক্তাক্ত অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় রাজের। সাগরিকা অবশ্য জানান, তিনি রাজকে ভালবাসেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসে চিরদিনের মতো হারিয়ে ফেলতে হল রাজকে। হাসপাতালের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাগরিকা। আর হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার জানান, মহানাদে ত্রিকোণ প্রেমের জেরে একটি ছুরি মারার ঘটনা ঘটেছে। আহতকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। অভিযুক্তকে জেরা করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু চলছে।