ওই নদী থেকেই মহিলারা জল নিতে যান। সেই জল কলসিতে করে বাড়ি নিয়ে আসেন। নানা কাজে তা লাগে। দুপুরে পুরুষরা ওই নদীতে স্নান করেন। কিন্তু এখন সব সেখানে বন্ধ আছে। কারণ কুমির আতঙ্ক। বিদ্যাধরী নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে একাধিক কুমির। আর তাতেই উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। এই কুমিরের ঘুরে বেড়ানোর দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এই হাড়োয়ার বিদ্যাধরী নদী সংলগ্ন কুলটি জেলেপাড়ায় রবিবার থেকে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এখন গ্রামবাসীরা আর বিদ্যাধরী নদীমুখো হচ্ছেন না। মহিলারা জল আনা আজ থেকে বন্ধ করে দিয়েছেন। পুরুষরা স্নানে যাচ্ছেন না ভয়ে।
চলতি বছরের জুলাই মাসে হাড়োয়ার উত্তর রানিগাছি গ্রামে বিদ্যাধরী নদীতে প্রথম কুমিরের দেখা মেলে। তারপর আবার সব শান্ত ছিল। প্রায় সাত ফুট লম্বা একটি পূর্ণবয়স্ক কুমির অগস্ট মাসের শুরুতে মৎস্যজীবীদের জালে ধরাও পড়ে। এই পর্যন্ত সবাই জানত। কিন্তু স্থানীয় মানুষজন আগে কখনও বিদ্যাধরীতে একের পরে এক কুমির ঘুরে বেড়াতে দেখেননি। তখন কুমিরের ভয়ে বেশ কিছুদিন মৎস্যজীবীরা নদীতে নামেননি। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা জল নিতে যেতেন। স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে খবর, নদীতে একটি বড় কুমিরের সঙ্গে দু’টি কুমিরকে ভাসতে দেখা গিয়েছে। কুমিরের ভয়ে মৎস্যজীবীরা জলে নামেননি। খবর দেওয়ার পর বন দফতরের কর্মীরা নজর রাখছেন।
আরও পড়ুন: ‘বিরোধী দলের নেতাদের গণপিটুনি দেওয়া হবে’, মালদার সভা থেকে হুঁশিয়ারি তৃণমূল বিধায়কের
এখন আবার নতুন করে বিদ্যাধরী নদীতে একের পর এক কুমিরের দেখা মেলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। বাড়ির কাজের জন্য জল নেওয়া থেকে শুরু করে স্নান করতে যাওয়া পর্যন্ত সব বন্ধ রাখা হয়েছে। কুলটি জেলেপাড়ায় মূলত মৎস্যজীবীদের বসবাস। চিংড়ির মিন ধরতে মহিলারাও এই নদীতে নামেন। সাগর মণ্ডল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার বক্তব্য, ‘বিদ্যাধরী নদীতে তিনটি কুমির ভাসছিল। একটি বড় ও দুটি ছোট কুমির। আমরা চাই বনদফতর কুমিরগুলি ধরে নিয়ে যাক। তাহলেই মানুষ এই আতঙ্ক থেকে বের হতে পারবে। না হলে আমাদের এলাকার মৎস্যজীবীরা নদীতে নামতে পারছেন না।’
এছাড়া এখানে দেখা যায়, চাষীরা কাজ করে দুপুরে এবং বিকেলে স্নান করে বাড়ি ফিরে যান। এখন আতঙ্কে সেটাও করতে পারছেন না তাঁরা। ফলে সারাদিন কাজ করে নোংরা অবস্থাতেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। কুমিরের পেটে যাওয়ার থেকে এভাবে বাড়ি ফেরা ভাল বলে অনেকে মনে করেন। বিদ্যাধরী নদীতে কুমিরের দাপট দেখানোর খবর পেয়ে বনদফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। গ্রামবাসীদের সতর্ক করেন। বনদফতর সূত্রে খবর, হাড়োয়ার বিদ্যাধরী নদীর সঙ্গে সুন্দরবনের নদীগুলির একটা যোগ আছে। তাই খাবারের খোঁজে কুমির চলে আসে এখানে।