এখন রাজ্যে দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর বঙ্গ–বিজেপিতে শুরু হয়েছে তুমুল ডামাডোল। কারণ দলের জেলা সভাপতিদের ডানা ছাঁটার কাজ শুরু করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে দলের জেলা এবং মণ্ডল পর্যায়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন ‘ইনচার্জ’রা। আবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে রাজ্য বিজেপিকে সব তথ্যই ‘সরল’ অ্যাপে দিতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কারণ ভুয়ো রিপোর্ট নিয়ে বেজায় চটে আছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এই অ্যাপের জেরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য থেকে বুথ স্তরের সংগঠনের হাল হকিকত এক ক্লিকে জেনে নিতে পারবেন।
কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে? সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, দলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের ‘অশুভ আঁতাত’ তৈরি হয়েছে। এই মৌরসি পাট্টা ভাঙতে উদ্যোগী হয়েছে নয়াদিল্লি। ‘ইনচার্জ’দের জেলা, বিধানসভা এবং মণ্ডল পর্যায়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দিয়ে আদতে জেলা সভাপতিদের ক্ষমতাই ছেঁটে ফেলা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই দলের অন্দরে চরম ডামাডোল শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপির এই কাঠামোগত বদল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে অ্যাপটির ছোট নাম— সরল। আসলে আকাররে বড়। পুরো নাম— সংগঠন রিপোর্টিং অ্যান্ড অ্যানালিসিস। গোটা দেশের যাবতীয় সাংগঠনিক তথ্য একত্রে পেতেই এই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হারার পর রাজ্যজুড়ে সংগঠনের বিকেন্দ্রীকরণ করেছিল বিজেপি। বাংলায় তাদের ৪২টি সাংগঠনিক জেলা। সেগুলি পাঁচটি জোনে বিভক্ত। কিন্তু সুকান্ত মজুমদার দায়িত্ব পেয়েই এই পাঁচটি জোনকে ভেঙে ১০টি বিভাগ করা হয় বলে সূত্রের খবর। এই জোন এবং বিভাগের মাথায় আছেন সংশ্লিষ্ট ইনচার্জরা। পদাধিকারবলে তাঁরা জেলা সভাপতিদের উপরে থাকলেও সেই সম্মান তাঁরা পাচ্ছিলেন না। জেলা সভাপতিরা তাঁদের পাত্তাই দিতেন না। সংগঠনিক রিপোর্ট তৈরি বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় তাঁরা অন্ধকারে থাকতেন। অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোনে এই অ্যাপ ডাউনলোড করে সেখানে বিজেপি সদস্যদের ফোন নম্বর দিয়ে লগ ইন করতে হবে। সুতরাং সবার নম্বর থাকবে কেন্দ্রীয় সার্ভারে।