গত জুলাই মাস থেকেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। তবে গত ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করার পরে পরিস্থিতি শান্ত হবে বলে আশা করেছিলেন অনেকেই। তবে এরপর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি সেই দেশে। বরং দিনকে দিন যেন অরাজকতা বেড়েই চলেছে। আর তার আঁচ এসে পড়ছে এপারেও। আর এবার জানা গেল, নদিয়ার তেহট্ট এলাকায় বাংলাদেশ থেকে এসে ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকা ফসল কেটে নিয়ে পালাচ্ছে লুটেরারা। এমনিতেই হাসিনার বিদায়ের পর থেকে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে শরণার্থী বাংলাদেশি হিন্দুরা বেআইনি ভাবে সীমান্ত পার করছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে আওয়ামি লিগ সমর্থকরাও ভারতে পালিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও জঙ্গি অনুপ্রবেশের শঙ্কাও রয়ে গিয়েছে। এর মাঝে সীমান্তে বাংলাদেশি লুটেরাদের এই জুলুমে নাজেহাল তেহট্টর কৃষকরা। এহেন পরিস্থিতিতে তাঁরা বিএসএফের দ্বারস্থ হয়েছে। (আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারের 'সময়সীমা' যেন বেঁধেই দিলেন বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টা…)
এমনিতেই বিগত দিনে অসম এবং বাংলায় একাধিক আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গি ধরা পড়েছে। যার জেরে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বেড়েছে। এরই সঙ্গে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, বিএসএফ থাকতে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশ থেকে এপারে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটছে কী করে? আবার বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে বাংলাদেশি জঙ্গিদের 'সাহায্য' করছে। তবে এই 'দোষারোপের' খেলার মাঝে সমস্যা এবং শঙ্কায় সাধারণ মানুষ। জানা গিয়েছে, তেহট্ট থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের সাহাপুর এলাকায় সীমান্ত পার করে বাংলাদেশিরা ফসল কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এই আবহে বিএসএফকে বিষয়টি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। যার পরে সীমান্তে অতিরিক্ত নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশিরা অনুপ্রবেশ করছে ভারতের তেহট্ট এলাকায়। ভারতীয় কৃষকদের জমিতে থাকা গম থেকে সর্ষে কেটে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা। এদিকে শুধু রাতে নয়, দিনের বেলাতেও কাঁটাতার লাগোয়া জমি থেকে ফসল চুরি হচ্ছে। বিগত কয়েক মাসে সীমান্তে বিএসএফের কড়াকড়ি বেড়েছে। এই আবহে ভারতীয় কৃষকরা কাঁটাতার লাগোয়া জমিতে নিয়মিত যেতে পারছেন না। সেখানে নিজের জমিতে যেতে গেলেও ভারতীয় কৃষকদের দেখাতে হচ্ছে পরিচয়পত্র। এই সব কড়াকড়ির মাঝে ফায়দা লুটছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা।
উল্লেখ্য, নদিয়ার বেশ কিছু জায়গায় আজও কাঁটাতার বসানো যায়নি। সেই জায়গাগুলি দিয়ে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। শীতকালে ভোরের দিকে কুয়াশা থাকায় সেই শঙ্কা আরও প্রবল হয়েছে। এই আবহে ভারতীয় কৃষিজমি থেকে লুটের ঘটনার সমাধানসূত্র বের করতে বিজিবির সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে বসতে চলেছে বিএসএফ। এরই সঙ্গে নাইট ভিসন ক্যামেরা এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।