Muharram 2023 Tajiya history: মহরমের তাজিয়া মিছিল ইরাক ও ইরানে বহন করা হয় না। এই মিছিলের সঙ্গে বাংলাদেশের নামও জড়িত রয়েছে। কীভাবে শুরু এই মিছিলের?
মহরমের তাজিয়া মিছিলের শুরু কবে?
মহরম পালনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল ‘তাজিয়া’। এই আরবি শব্দটির সাধারণ অর্থ হল শোক প্রকাশ করা। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা মহরম মাসের প্রথম ১০ দিন কারবালার ঘটনা উপলক্ষে শোক পালন করেন। প্রসঙ্গত, আশুরা বা মহরমের দশম দিনে ইমাম হোসেন শাহাদাতবরণ করেছিলেন। তাই ওই দিন বলে তাঁর কবরের প্রতিকৃতি নিয়ে মিছিল করা হয়। ইমাম হোসেনের কবরের এই প্রতিকৃতির নামই তাজিয়া। পবিত্র কোরানের কোথাও এ শব্দ উল্লেখ নেই। তবে কোনও মৃত ব্যক্তির শোকাহত আত্মীয়দের প্রতি সমবেদনা জানাতে এই শব্দ প্রায়ই ব্যবহার করা হয়। শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে ‘তাজিয়া’ শব্দ প্রাথমিকভাবে শাহাদাতপ্রাপ্ত ইমামদের জন্য শোক জ্ঞাপন করা বোঝায়। বিশেষ করে ইমাম হোসেনের প্রতি শোক প্রকাশকেই বোঝানো হয়।
ঘটনাক্রমে শিয়া মতবাদের উদ্ভব হয়েছিল ইরাক ও ইরানে। কিন্তু সেখানে মহরমের শোকমিছিলে তাজিয়া বহন করা হয় না। বাংলাদেশে যখন মোগল শাসন, তখন শাহ সুজা (১৬৩৯-৫৯) বাংলার সুবেদার থাকাকালীন এগ অঞ্চলে শিয়া সম্প্রদায়ের প্রভাব বাড়তে থাকে। বাংলাদেশের ঢাকার নায়েব-নাজিমদের অধিকাংশই ছিলেন শিয়া। সে সময় ১৬৪২ খ্রিষ্টাব্দে সৈয়দ মীর মুরাদ ঢাকায় হোসেনি দালান নির্মাণ করেন। প্রায় একই সময়ে বাংলাদেশের অন্যান্য স্থান যেমন মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, অষ্টগ্রাম, সৈয়দপুর, সিলেটে ইমামবাড়া তৈরি করা হয়েছিল।
তাজিয়া মিছিলে বহন করা কবরটি সাধারণত তাজিয়া কাঠ, কাগজ, সোনা, রুপো, মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়। তবে ঢাকার হোসেনি দালানের তাজিয়াটি কাঠ ও রুপোর আবরণ দিয়ে তৈরি করা হয়। তাজিয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বুক চাপড়ে ও জিঞ্জির দিয়ে পিঠের ওপর আঘাত করে নিজেদের রক্তাক্ত করেন।
এই দিনের মিছিলে কয়েকজন লাঠি ঘোরাতে ঘোরাতে ও তরবারি চালাতে চালাতে এগিয়ে যান। ওই সময় দুটি শিবিকা সমেত কিছু লোক অশ্বারোহী সৈন্যের সাজে মাতম করতে করতে এগিয়ে চলেন। তাঁদের পেছনে থাকে একদল গায়ক। মর্সিয়া গাইতে গাইতে তাঁরা মিছিল অনুসরণ করেন। তার পর থাকে হোসেনের সমাধির প্রতিকৃতি। এভাবে মিছিলটি এগোতে এগোতে আগে থেকে ঠিক করে রাখা স্থানে গিয়ে শেষ হয়।