সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল–জবাব চলে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারাদের নিয়ে। স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) সেখানে জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট চাইলে যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের পৃথক তালিকা জমা দিতে তারা প্রস্তুত। এই কথা জানানোর পর সেটা কেমন করে করা হবে তা নিয়ে সে দিনই চর্চা হয় সর্বোচ্চ আদালতে। ইতিমধ্যেই জানাজানি হয়েছে প্রার্থীদের ওএমআর শিট নেই। সেগুলি খোয়া গিয়েছে। সেক্ষেত্রে যোগ্য এবং অযোগ্য কেমন করে ঝাড়াই–বাছাইয়ের মাধ্যমে আলাদা করা হবে? উঠছে প্রশ্ন। এই প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
এদিকে সূত্রের খবর, যেহেতু এসএসসি দাবি করেছে পৃথক তালিকা তারা দেবে সেহেতু সুপ্রিম কোর্ট একটু হলেও ভরসা রাখছে। এসএসসি এখন যেটা করতে পারে সেটা হল— গাজিয়াবাদ থেকে সিবিআইয়ের উদ্ধার করা ২০১৬ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মেনে নেওয়া পরীক্ষার ওএমআর শিট আদালতে জমা দেওয়া। ওই ওএমআর শিটগুলি এসএসসি তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছিল। সিবিআইয়ের হাত থেকে পাওয়া ওই ওএমআর শিটগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। আর এটাই তুরুপের তাস হতে পারে। সেক্ষেত্রে বেঁচে যাবে যোগ্যদের চাকরি।
আরও পড়ুন: ‘দিল্লির পরিযায়ী পাখিরা বাংলায় মিথ্যা ছড়ানো ছাড়া কিছুই করে না’, খোঁচা দিলেন মমতা
অন্যদিকে সদ্য কলকাতা হাইকোর্ট স্বচ্ছতার অভাবে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এই বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে রাজি হননি। বেআইনিভাবে চাকরি যাঁরা পেয়েছেন তাঁদের তালিকা আগেই হলফনামা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দিয়েছিল এসএসসি। কিন্তু যোগ্যদের তালিকা এসএসসি দেয়নি বলে অভিযোগ। এসএসসি এই বিষয়ে সাফাই দিয়ে বলেছে, আদালতই চায়নি যোগ্যদের তালিকা। সুতরাং এখন সুপ্রিম কোর্টে পৃথক তালিকা দেবে এসএসসি। তারপর আদালতের নির্দেশ মতো কাজ হবে। প্রত্যেক যোগ্য প্রার্থীর ওএমআর খতিয়ে দেখতে প্রস্তুত স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাই তারা পৃথক করার কথা বলেছে।
এছাড়া এখন এই তালিকা প্রস্তুত করতে কোমর বেঁধে নেমেছে এসএসসি। তাই আগামী শুনানিতেই এই যোগ্য–অযোগ্যদের তালিকা বিচারপতির হাতে দিতে চায় স্কুল সার্ভিস কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল এবং ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে আগেই নবম–দশমের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে ৩ হাজার ৬৩০ জনের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেছিল এসএসসি। তাই মধ্যশিক্ষা পর্ষদও এঁদের নিয়োগপত্র প্রত্যাহার করে নেয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ অবশ্য এতে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। এই শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীদের বেতনও আবার চালু হয়েছিল। এখন প্রায় ২৬ হাজারের চাকরিহারাদের বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। ইতিমধ্যেই এপ্রিলের বেতন ঢুকেছে চাকরিহারাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।