ধরুন রাত ৮টায় হাওড়া স্টেশনে এসে ট্রেনে চড়লেন। পরের দিন সকাল ৮টায় দিল্লি পৌঁছে গেলেন। আবার সেদিনই দিল্লি থেকে ট্রেন ধরে পরের দিন ১২ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে এলেন।
হ্যাঁ, এরকমই দ্রুত গতিতে ট্রেন পরিষেবা দেবে ভারতীয় রেল। দিল্লি-মুম্বই এবং দিল্লি-হাওড়া রুটের ট্রেনে ১২ ঘণ্টার মধ্যে জার্নি টাইম রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যেই তা বাস্তবায়িত হবে।
এই মুহূর্তে হাওড়া থেকে মুম্বই যেতে ২৫ ঘণ্টা সময় লাগে। অন্যদিকে হাওড়া থেকে দিল্লি যেতে ১৭ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে যে দিন যাওয়া হয়, সেইদিনটার অর্ধেকই প্রায় নষ্ট। তাছাড়া ট্রেন যাত্রার ধকলও রয়েছে। তাই সময়টা কমিয়ে আনার বিষয়ে। পরিকল্পনা তৈরি করেছে রেল। ইতিমধ্যেই এই প্ল্যান উপরমহলের সবুজ সংকেত পেয়ে গিয়েছে।
শীঘ্রই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে। দুটি রুটেই ট্রেনের গতি বাড়িয়ে ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা করতে চাইছে রেল। বর্তমানে দিল্লি-হাওড়া রুটে ট্রেন ৮৫ কিমি এবং দিল্লি-মুম্বই রুটে ১৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে চলে।
তবে, এর জন্য রেললাইন এবং তার আশেপাশে কিছু পরিবর্তন করতে হবে।
রেলের এক উচ্চপদস্থ ইঞ্জিনিয়ার জানালেন, 'এত দ্রুতগতির ট্রেনের ক্ষেত্রে সেই ধরণের লাইন প্রয়োজন। যেখানে দরকার, সেখানে রেললাইনে পরিবর্তন আনা হবে। এছাড়া ট্রেনের উপরে থাকা বৈদ্যুতিক তারগুলিও পাল্টানো হবে। '
আধিকারিক জানালেন, এমনিতেই রেল লাইন পারাপার করতে গিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা কম নয়। তাই এত দ্রুত ট্রেনের ক্ষেত্রে সেই আশঙ্কা আরও বেশি। এজন্য রুটের নির্দিষ্ট স্থানে লাইনের দুই পাশে দেওয়াল করে দেওয়া হবে। তাছাড়া থাকবে কড়া নজরদারি। বাড়ানো হবে লেভেল ক্রসিংয়ের সংখ্যা।
যাত্রীদের নিরাপত্তাকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। 'ট্রেনের নিরাপত্তার জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকবে। ট্র্যাক পরিদর্শন ও মেরামতের জন্য অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় মেশিন এবং ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে।'
প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৫,৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে ভারতীয় রেল। সিগন্যালিং এবং টেলিকমের কাজের জন্য প্রায় ২,০০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে।