জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের সমস্ত সংবাদমাধ্যম চ্যানেলগুলিকে প্রতিরক্ষা অভিযান এবং নিরাপত্তা বাহিনীর গতিবিধির সরাসরি সম্প্রচার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এরপরেই প্রশ্ন উঠছে, পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ হামলার পাল্টা জবাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কি কোনও ‘বড়’ পদক্ষেপ করতে চলছে ভারত? পহেলগাঁওয়ে বৈসরন উপত্যকায় পর্যটকদের ওপর জঙ্গিহানায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ জন নিরীহ মানুষের। তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৩ বাসিন্দাও। এছাড়াও বেশ কিছু মানুষ আহত। ইতিমধ্যে ভারত সরকার পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক সার্জিকাল স্ট্রাইক করেছে।
আরও পড়ুন-গুজরাটে বড় অভিযান! ৫৫০ জনের বেশি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী আটক
তারইমধ্যে শনিবার এক নির্দেশিকায় কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, 'জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে, সমস্ত মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, সংবাদসংস্থা এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের প্রতিরক্ষা এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সম্পর্কিত কার্যক্রম সম্পর্কিত বিষয় প্রকাশ করার সময় সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন এবং বিদ্যমান আইন ও বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।'
আরও বলা হয়েছে, 'বিশেষ করে প্রতিরক্ষা অভিযান বা সেনার গতিবিধি সম্পর্কিত উৎস-ভিত্তিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোনও রিয়েল-টাইম কভারেজ, ভিজ্যুয়াল প্রচার বা প্রতিবেদন করা উচিত নয়। সংবেদনশীল তথ্যের প্রকাশ অসাবধানতাবশত শত্রুপক্ষকে সহায়তা করতে পারে এবং অভিযানের কার্যকারিতা এবং সেনাকর্মীদের নিরাপত্তা বিপন্ন করতে পারে।'
নির্দেশিকায় কেন্দ্রের তরফ থেকে কার্গিল যুদ্ধ এবং মুম্বই জঙ্গি হামলা-সহ অতীতের বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে অনিয়ন্ত্রিত মিডিয়া কভারেজের ফলে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রতিকূলের মুখে পড়তে হয়েছিল বলে কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ইতিমধ্যেই সমস্ত টিভি চ্যানেলকে কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক (সংশোধন) বিধি, ২০২১ এর নিয়ম ৬(১)(পি) মেনে চলার জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে। নিয়ম ৬(১)(পি) বলে যে, 'কেবল পরিষেবায় এমন কোনও অনুষ্ঠান প্রচার করা উচিত নয় যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সরাসরি সম্প্রচার থাকে। যেখানে মিডিয়া কভারেজ যথাযথ সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন কর্মকর্তার দ্বারা পর্যায়ক্রমিক ব্রিফিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, যতক্ষণ না এই ধরনের অভিযান শেষ হয়। জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় গণমাধ্যম, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং ব্যক্তিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আইনি বাধ্যবাধকতা ছাড়াও, আমাদের সম্মিলিত পদক্ষেপগুলি যাতে চলমান অভিযান বা আমাদের বাহিনীর নিরাপত্তার সঙ্গে আপস না করে তা নিশ্চিত করা একটি যৌথ নৈতিক দায়িত্ব।'
আরও পড়ুন-গুজরাটে বড় অভিযান! ৫৫০ জনের বেশি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী আটক
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, পর্যটকদের ধর্মপরিচয় জিজ্ঞাসা করে বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছে। ওই হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। অটারী সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। পাকিস্তান প্রথম থেকেই এই হামলার সঙ্গে যোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের পাল্টা দাবি, ভারত সরকার পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।