প্রয়াত তেলগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত নাম, বর্ষীয়ান অভিনেত্রী, রাজনীতিবিদ, প্রাক্তন সাংসদ জে যমুনা। শুক্রবার, হায়দরাবাদে নিজের বাসভবনে মৃত্যু হয় জে যমুনার। মৃত্য়ুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বয়সজনিত কারণেই বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গিয়েছেন তাঁর এক ছেলে ও মেয়েকে। জে যমুনার স্বামী জুলুরি রমনা রাও ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। ২০১৪-তেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর জে যমুনার দেহ জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ফিল্ম চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হবে। দিনের শেষে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে।
১৯৩৬ সালের ৩০শে অগস্ট হাম্পিতে জন্মগ্রহণ করেন জে যমুনা। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই অভিনেত্রী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক শাখা প্রজা নাট্য মণ্ডলীর গারিকপতি রাজা রাও দ্বারা নির্মিত পুট্টিল্লু (১৯৫২) ছবিতে অভিনয় করেন তনি। এর আগে তিনি রাজা রাও পরিচালিত ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে মঞ্চস্থ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। এল ভি প্রসাদের মিসাম্মা (১৯৫৫) ছবিতে একটি নিষ্পাপ মেয়ের ভূমিকায় অভিন করে খ্যাতি অর্জন করেন। সব মিলিয়ে, তিনি তেলেগু ভাষার 198টি ছবিতে অভিনয় করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভুকাইলাস, গুন্ডাম্মা কথা, চিরঞ্জিভুলু, মুগা মানাসুলু এবং রামুডু ভীমুডু ইত্যাদি।

জে যমুনা
তিনি সেসময় দক্ষিণের গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী ছিলেন। জে যমুনা ‘শ্রীকৃষ্ণ তুলাভরম’-এ ভগবান কৃষ্ণের স্ত্রী সত্যভামা এবং ‘সম্পূর্ণ রামায়ণম’-এ রাজা দশরথের স্ত্রী কৈকেয়ীর মতো বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কাজ করেছেন বলিউডেও। সুনীল দত্তের সঙ্গে ‘মিলন’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও জিতেছিলেন। তামিল , তেলগু এবং কন্নড়ের মতো অন্যান্য দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রেও দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন। ২০২১ সালে আম্মামাগারি মানভাদুতে তার শেষ উপস্থিতি ছিল। তেলেগু শিল্পী সমিতিও প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং গত ২৫ বছর ধরে তার মাধ্যমে সমাজসেবা করছেন।

জে যমুনা
১৯৮০ সালে যমুনা কংগ্রেসে যোগ দেন এবং অন্ধ্রপ্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের সভাপতি হন তিন। তিনি ১৯৮৯-এ লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং রাজামুন্দ্রি সংসদীয় আসন থেকে জয়ী হন এবং সাংসদ নির্বাচিত হন। তবে ১৯৯১ সালে নির্বাচনে তাঁর হার হলে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। ১৯৯০-এর শেষের দিকে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়ে সংক্ষিপ্তভাবে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে প্রচারণা চালান।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগন মোহন রেড্ডি এবং তাঁর তেলেঙ্গানার প্রতিপক্ষ কে চন্দ্রশেখর রাও, উভয় রাজ্যের রাজ্যপান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রবীণ অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।