বাংলা নিয়ে ‘কুৎসার ঝুলি’ রয়েছে ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্টবেঙ্গল’-এ দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ। ঘোষণার পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে এই ছবি। কিন্তু সব বিতর্ক পেরিয়ে শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে সনোজ মিশ্র পরিচালিত এই ছবি। এই ছবির মুক্তি রুখলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা পর্যন্ত হয়েছিল। তা অবশ্য় ধোপে টেকেনি।
‘রাজ্যের মানুষ অনেক সহনশীল', এই কথা জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ছবির মুক্তি আটকাতে কোনওরকম পদক্ষেপ নেয়নি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল দেশের অনান্য রাজ্যে মুক্তি পেলেও পশ্চিমবঙ্গে আজ, ৩০শে অগস্ট মুক্তি পেল না এই বিতর্কিত ছবি।
আর জি কর কাণ্ডের জেরে খানিক কোণঠাসা মমতা সরকার। এই পরিস্থিতিতেই মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্টবেঙ্গল’, তবে পশ্চিমবঙ্গে এই ছবির মুক্তি আটকায়নি রাজ্য সরকার, বরং নির্মাতারাই বাংলায় এই ছবি রিলিজ করেননি। সেই নিয়েই এবার প্রশ্ন তুললেন প্রযোজক রানা সরকার।
ফেসবুকে লম্বা পোস্টে রানা লেখেন, ‘The Diary of West Bengal নামে যে সিনেমাটি আজ রিলিজ করছে সেটা নিয়ে কারো কোনো উৎসাহ নেই। নির্মাতারা পশ্চিমবঙ্গে সিনেমাটি নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক তৈরি করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু সিনেমা পশ্চিমবঙ্গে রিলিজ করবেন না প্রথম থেকেই তাদের পরিকল্পনা ছিল। মিডিয়া উৎসাহ দেখাল না সিনেমাটি নিয়ে তাই তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হলো।আমরা সবাই জানি এটা আদ্যপান্ত একটা প্রোপাগান্ডা ফিল্ম, দেশের মানুষের চোখে পশ্চিমবঙ্গের একটা বিভ্রান্তমূলক চিত্র দেখানোর চেষ্টা। ধর্মীয় মেরুকরণ ও রাজনীতি নিয়ে আদ্যপান্ত একটা উদ্দেশ্যমূলক প্রয়াস’।
রানা তাঁর পোস্টে আরও লেখেন, ‘লক্ষ্যনীয় যে প্রযোজক নির্মাতারা সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন এই সিনেমাটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে। তারা এই খবর রটিয়েছিল যে সিনেমাটির পরিচালক সনজ মিশ্র কলকাতায় আসার পর নিঁখোজ। তাঁকে প্রচুর হুমকি দেওয়া হয়েছিল যার কোন ভিত্তি ছিল না, তারপর তাঁকে বারাণসী তে পাওয়া যায়। কিন্তু মেনস্ট্রিম মিডিয়া এই বিষয়ে কোনো উৎসাহ দেখায়নি বলে বিতর্ক তৈরি করতে তারা ব্যর্থ। কলকাতা হাইকোর্ট সিনেমাটি রিলিজ বন্ধ করার বিষয়ে কোন হস্তক্ষেপ করেনি। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো সিনেমাটি সারা দেশে রিলিজ করা হলো, পশ্চিমবঙ্গে কোনও হলে রিলিজ করা হলো না। না, কোন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে সিনেমাটি পশ্চিমবঙ্গে রিলিজ হলো না এরকম না। প্রযোজক নির্মাতারা নিজেরাই এই সিনেমাটি পশ্চিমবঙ্গে রিলিজ করলেন না।’
এই ধরণের সিনেমা কীভাবে সেন্সর বোর্ডের কাছে ছাড়পত্র পেতে সফল হয়, সেই নিয়েই প্রশ্ন তুললেন রানা। তিনি লেখেন, ‘সেন্সর বোর্ড এই সিনেমাটিকে সার্টিফিকেট দিল কিভাবে? পশ্চিমবঙ্গের বিষয়ে ভুল কিছু দেখানো হলে তার দায় সেন্সর বোর্ড (CBFC) নেবে তো?’
ছবির ট্রেলারে নীল-সাদা শাড়ি পরা মুখ্যমন্ত্রীর মুসলিম তোষণের কাহিনি উঠে এসেছে। যিনি ঘোষণা করছেন, ‘বাংলায় সিএএ, এনআরজি লাগু হতে দেব না’। ঝলকে উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের গল্প, রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিমদের তোষণের অভিযোগ। বাংলায় এই ছবি মুক্তি না পেলেও চুপ থাকেননি কুণাল ঘোষ। তৃণমূল নেতা আফসোসের সুরে বলেন, ‘দিদির দুঃসময়ে পাশে নেই টালিগঞ্জের বাবু-বিবিরা’ অথচ মোদির প্রচারে মুম্বইয়ে একের পর এক ছবি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু কেন ‘দ্য ডায়রি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ মুক্তির আলো দেখল না বাংলায়? সেই নিয়ে চুপ নির্মাতারা।