ছেলে জনপ্রিয়তার শীর্ষে, তবুও নিজের উপার্জনের পথ থেকে অনড় ডান্সার তথা কোরিওগ্রাফার ধর্মেশের বাবা। বলিউডের এখন অন্যতম সেরা ডান্সার তথা অভিনেতা ধর্মেশ ইয়েলান্ডে। হিপহপ, ব্রেক ডান্স, ফ্রিস্টাইল ক্যামেরার সামনে সবটাই তাঁর আঙুলের ডগায়। তবু পর্দার পিছনে ধর্মেশের জীবনটা এখনও অনেকেরই অজানা।‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ রিয়্যালিটি শো-র সিজন ২-তে অডিশান দিতে এসেছিল খুব সাধারণ ঘরের একটি ছেলে। বিচারকের আসনে ছিলেন গীতা কাপুর,রেমো ডিসুজা এবং টেরেন্স লুইস। গান চালু হতেই সমস্ত স্পট লাইট ছেলেটার উপরে এসে পড়ে। মুহূর্তের জন্য চোখ সরাতে পারেননি বিচারকের আসনে থাকা তিনজনই। সেই থেকে রিয়্যালিট শো-তে পথ চলা শুরু তাঁর। সিজেন জয়ী না হতে পারলেও সকলের মন অনায়াসেই জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। এরপর অবশ্য পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ধর্মেশকে।‘এবিসিডি’ ছবিতে রেমো ডিসুজার সঙ্গে কাজের সুযোগ পান ধর্মেশ। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘ডান্স প্লাস’-এ বিচারকের আসনে বসেছেন তিনি। অংশ নিয়েছেন ‘খতরো কে খিলাড়ি’ সহ একাধিক রিয়ালিটি শোয়ের মঞ্চে। কোরিওগ্রাফার হিসাবেও একের পর এক কাজ করে চলেছেন বলিউডে। তবে তাঁর বাবার উপার্জনের পথা চায়ের দোকান।জানা গিয়েছে, একসময় চরম আর্থিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলেন ধর্মেশের পরিবার। ধর্মেশ ছোট থাকাকালীন, পুরসভা থেকে তাঁর বাবার একমাত্র উপার্জনের পথ ছোট একটা দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। এরপরই তাঁর বাবা ছোট একটা চায়ের দোকান খুলে, দিনে মাত্র ৫০ থেকে ৬০ টাকা আয় করতেন। ছেলের পড়াশোনা চালাতেন। পাশাপাশি নাচের প্রতি ভালবাসা দেখে ছেলেকে নাচের স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯ বছর বয়সে তাঁর জীবনের মোড় ঘুরে যায়। পড়াশোনা চলাকালীন কলেজ ছেড়ে পিওনের চাকরিতে জয়েন করে ধর্মেশ। পাশাপাশি নিজের নাচের স্কুলে নাচ শেখাতেন। সেখান থেকে মাসে ১৬০০ টাকা উপার্জন করতেন। ধীরে ধীরে বলিউডের বিভিন্ন ছবিতে ব্যাক আপ ডান্সার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। ডান্স রিয়্যালিটি শো ‘বুগি ভুগি’তে অংশগ্রহণ করে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরস্কার পান। সেই টাকা দিয়ে পরিবারিক দেনা শোধ করেন।বেশ কয়েক বছর পর ডান্স ইন্ডিয়া ডান্সের-মঞ্চে ফের নিজেকে প্রমান করার সুযোগ পান তিনি। এখন বলিউডে তাঁকে সবাই চেনে। তবে ধর্মেশের কথায়, এখনও তাঁর বাবা চায়ের দোকান চালিয়ে উপার্জন করেন। তাঁকে বারণ করা সত্ত্বেও তিনি নিজের পেশা ছাড়তে রাজি নন। কোরিওগ্রাফার ধর্মেশ অবশ্য জানিয়েছেন, অদম্য জেদ এবং হাল না ছাড়ার বিষয়টি বাবার কাছ থেকেই শিখেছেন তিনি।