'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' ছবি নিয়ে ইজরায়েল পরিচালক নাদাভ লাপিড-এর মন্তব্য ঘিরে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। ইফির তরফেও স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এই মন্তব্য একান্তভাবে নাদাভের ব্যক্তিগত, এর সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ নেই।
'দ্য় কাশ্মীর ফাইলস'-কে 'অশ্লীল' এবং 'পক্ষপাত দুষ্ট প্রচারের হাতিয়ার' বলে উল্লেখ করেছিলেন ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্য়াল-এর জুরি প্রধান নাদাভ লাপিড ৷ সমাপতনী অনুষ্ঠানে এই মন্তব্যের পর সিনেমার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, রাজনৈতিক এবং ভারতীয় জনগণের মধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত এই ছবি ১৯৯০ সালে কাশ্মিরী পণ্ডিতদের দেশত্যাগের বর্ণনা দেয়।
যাঁর মন্তব্যে ঘিরে চারদিকে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সেই নাদাভই এতদিন মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন। এবার যাবতীয় বিতর্কের নিয়ে ইজরায়েলি সংবাদপত্র Ha'aretz-এর কাছে মুখ খুললেন নাদাভ। তাঁর কথায়, ‘খারাপ ছবি বানানো কোনও অপরাধ নয়, কিন্তু এটা দেখতে খুবই অশোভনীয়, অশ্লীল এবং হিংসাত্মক প্রোপাগান্ডা নিয়ে ছবি।’
আন্তর্জাতিক জুরির সদস্য হিসেবে নিজের মন্তব্য পেশ করার অধিকার রয়েছে বলে মনে করেন ইজরায়েল পরিচালক। নাদাভ আরও বলেছেন, ‘আগামী দিনে ইজরায়েলেও যদি এই ধরণের ছবি তৈরি হয় সেক্ষেত্রে খুব একটা আশ্চর্য হবো না। আমি খুশি হব যে এমন পরিস্থিতিতে একজন বিদেশী জুরি প্রধান তাদের দেখে কিছু বলতে ইচ্ছুক হবে। যে জায়গায় আমি আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম সেখানের প্রতি আমার কর্তব্য মনে হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: দুই মেয়েরই সঙ্গীত চর্চায় ঝোঁক, তাঁদের ভবিষ্যত প্ল্যান কী, মুখ খুললেন ফারহান
নাদাভ আরও বলেছেন, ‘আমরা শিখেছি যে রাজনৈতিক চাপের কারণে ছবিটিকে উৎসবের অফিসিয়াল প্রতিযোগিতায় দেখানো হয়েছিল। একজন বিদেশী হিসাবে সেখানে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, সেখানে এমন কিছু বলার বিষয় বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যা সেখানে বসবাসকারী মানুষের কঠিন সময় হতে পারে, তবে আমি গোপনীয়তা এবং মুখ বুজে বসে থাকায় বিশ্বাস করি না। আপনাকে যদি মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিতে বলা হয়, আপনি কী বিষয়ে কথা বলবেন? শুধু সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে, দেখেছেন এবং খাবার খেয়েছেন? এসব নিয়ে!’
কাশ্মীর সংঘাত সম্পর্কে 'যথেষ্ট' জ্ঞান নেই নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন নাদাভ। তবে ইজরায়েলি পরিচালক এও স্বীকার করেছেন, ছবি নিয়ে এমন মন্তব্য করার পর থেকে ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে 'শতশত ইমেল এবং বার্তা' পেয়েছেন যারা 'এটি নিয়ে খুশি।' এটি এমন একটি চলচ্চিত্র যা ভারত সরকার উত্সাহিত করে, আমি ধরে নিচ্ছি যে সেখানকার সরকার এতে খুশি নয়। কিন্তু একটি দেশ কি শুধু তার সরকারের কথায় চলে? আমার মনে হয় তেমনটা নয়। আমি যা বলেছি তা ভারত সরকারের ভালো না-ও লাগতে পারে, এমনকি ইজরায়েল সরকারেরও ভালো না-ই লাগতে পারে, আসলে সেখানে রাষ্ট্রদূতেরা প্রতিনিধিত্ব করছেন।'