একেবারে রক্তক্ষয়ী পঞ্চায়েত ভোটপর্ব। মনোনয়নপর্ব থেকেই শুরু হয়েছে একের পর এক খুন। বোমা ফাটছে একের পর এক । ভাঙর থেকে চোপড়া, দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি। বুক কাঁপছে সাধারণ মানুষের। সাংবাদিকদের লক্ষ্য করেও চলছে বোমাবাজি। এসবের মধ্য়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, কথা নয়, কাজ হবে, কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি জানিয়েছেন, কোনও কথা নয়, শুধু অ্যাকশন নেওয়ার সময়। একটু ধৈর্য্য ধরুন। দেখুন কী হয়। কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জানিয়েছেন রাজ্যপাল।সেই সঙ্গেই রাজভবন থেকে রাজ্যপালের বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভোটের আগেই রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে স্তম্ভিত রাজ্যপাল। দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে সংবাদমাধ্যমও। মনে রাখতে হবে ভোটের জয় ভোট গণনার উপর নির্ভর করে। মৃতদেহের গণনার উপর নয়। গুণ্ডা, দুষ্কৃতীদের রাজ করতে দেওয়া যাবে না। যখন চতুর্থ স্তম্ভ আক্রান্ত হয় তার মানে গণতন্ত্র আক্রান্ত। সাধারণ মানুষও আক্রান্ত। সংবিধান আক্রান্ত। নতুন প্রজন্ম আক্রান্ত। এই শয়তানের খেলা বন্ধ হওয়া দরকার। তা অবশ্য়ই বন্ধ হবে। এর শেষের শুরু হবে বাংলায়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণ মানুষের শান্তি ও সম্প্রীতির অধিকার রয়েছে। সেই সঙ্গেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে যতই ক্ষমতাশালী বলে নিজেকে মনে করুক না কেন, কোনওভাবেই তাদের নিজেদের হাতে আইন তুলে নিতে দেওয়া চলবে না। একেবারে কড়া বিবৃতি রাজভবনের। সেই সঙ্গেই রাজ্যপাল সংবাদ মাধ্য়মের সামনে জানিয়েছেন, কথা নয়, কাজ হবে। এদিকে বৃহস্পতিবার মনোনয়নের শেষ দিনে একেবারে ঘটনাবহুল ছিল বাংলা। বলা ভালো হিংসায় তপ্ত হল বাংলা। ভাঙড়ে বোমা, গুলির লড়াই। মুড়ি মুড়কির মতো বোম পড়ল এদিনও। পুলিশ কার্যত নীরব দর্শক। যেন রণাঙ্গন। আক্রান্ত হল সংবাদমাধ্য়ম। একের পর এক হামলার চেষ্টা সংবাদমাধ্যমের উপর। পিছু হঠল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত পেশার তাগিদে ময়দানে থাকলেন সাংবাদিকরা। তবে এসবের মধ্য়েই হাইকোর্ট নির্দেশ দিল গোটা রাজ্য়েই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্য়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন করতে হবে । প্রধান বিচারপতি আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এনিয়ে। কমিশনের ভূমিকায় তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। কমিশনের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা প্রশংসনীয় নয় বলেও উল্লেখ করেছে আদালত।এবার গোটা রাজ্য জুড়েই পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ আদালতের। এই রায়ের বাস্তবায়নের জন্য আরও দেরি করা হলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাড়তে পারে বলে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গেই জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর খরচ বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। নির্দেশনামার কপি পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্য়ে বাহিনী চেয়ে আবেদন করতে হবে কমিশনকে। আর তারপরই বাহিনী পাঠাতে হবে কেন্দ্রকে।