পার্থ টেস্টে অভিষেকেই বিস্ফোরণ ঘটালেন পাকিস্তানের আমের জামাল। ৬ উইকেট নিয়ে ৫৬ বছরের পুরনো স্মৃতি ফেরালেন নবাগত পাক পেসার। অজিদের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে প্রথম দিন বৃহস্পতিবার জামাল ডেভিড ওয়ার্নার এবং ট্র্যাভিস হেডের গুরুত্বপূর্ণ ২টি উইকেট তুলে নিয়ে কিছুটা অক্সিজেন দিয়েছিলেন পাকিস্তানকে। আর শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার বাকি ৫ উইকেটের চারটিই তুলে নিয়েছেন আমের জামাল। ১১১ রানে ৬ উইকেটের বোলিং ফিগার নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংস শেষ করেন ২৭ বছর বয়সী এই পেসার।
জামালের দাপটেই দ্বিতীয় দিন অজিরা ৫ উইকেটের বিনিময়ে মাত্র ১৪১ রান যোগ করতে পারে। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পায় পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার অজিরা ৫ উইকেট হারিয়ে করেছিল ৩৪৬ রান। আর এদিন ১৪১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসায়, অন্তত পাঁচশোর রানের গণ্ডি টপকাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ৪৮৭ রানে অলআউট হয়ে যায় অজিরা।
১১১ রানে ৬ উইকেট- জামালের এই বোলিং ফিগার অস্ট্রেলিয়ায় সফরকারী কোনও বোলারের অভিষেকে তৃতীয় সেরা। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অভিষেকে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন ভারতের সৈয়দ আবিদ আলি। অ্যাডিলেডে ১৯৬৭ সালে ৫৫ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। আবিদের ৩ বছর আগে একই কীর্তি ছিল পাকিস্তানের আরিফ বাটের। মেলবোর্নে তিনি নিয়েছিলেন ৮৯ রানে ৬ উইকেট। আবিদ ভারতের হয়ে খেলেছিলেন ২৯টি টেস্ট। আরিফের ক্যারিয়ার অবশ্য থেমে গিয়েছিল ৩টি টেস্টেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই টেস্টের পর নিউজিল্যান্ড সফরে আর দু'টি টেস্ট খেলেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফিল্ডিং করতে গিয়ে চোট, সাপোর্ট স্টাফেদের কোলে চেপে মাঠ ছাড়েন, কতটা গুরুতর? নিজেই আপডেট দিলেন সূর্য
সব মিলিয়ে অভিষেকে ৫ বা এর বেশি উইকেট নেওয়া ১৪তম পাকিস্তানি বোলার হলেন জামাল। এ ক্ষেত্রে তাঁর চেয়ে ভালো বোলিং ফিগার আছে আর পাঁচ পাকিস্তানি বোলারের। ৬৬ রানে ৭ উইকেট নিয়ে সবার উপরে রয়েছেন আর এক পেসার মহম্মদ জাহিদ। ক্যারিয়ারে পাঁচটি টেস্ট খেলা জাহিদের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৬ রানে ৭ উইকেট নিয়ে।
প্রতিপক্ষের মাটিতে অভিষেকে সেরা বোলিং ফিগারে অবশ্য আরিফের পরই আছেন জামাল। দেশের বাইরে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেকে সেরা বোলিং ফিগারটি অফ স্পিনার বিলাল আসিফের। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৮ সালে তিনি ৩৬ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন দুবাইয়ে। দুবাইকে অবশ্য পাকিস্তানের দ্বিতীয় হোমই বলা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: কেশব মহারাজের বলে এলবিডব্লিউ হন শুভমন, তবে রিভিউ নিলেই পুড়ত না কপাল- ভিডিয়ো
বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের শেষে ৩১ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন মিচেল মার্শ। ৩২ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন অ্যালেক্স ক্যারি। সেখান থেকে এদিন খেলতে নেমে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেন মিচেল মার্শ। তাঁর ১০৭ বলে ৯০ রানের ইনিংসটি অজিদের সাড়ে চারশোর রানের গণ্ডি টপকাতে সাহায্য করে। তাঁর ইনিংসে ছিল ১৫টি চার, একটি ছক্কা। এদিকে অ্যালেক্স ক্যারি ৭৩ বলে ৩৪ করে আউট হয়ে যান। এই জুটি ভাঙেন জামালই। মার্শ যখন একদিকে উইকেট আঁকড়ে লড়াই করছেন, তখন জামাল উল্টোদিকে একের পর এক উইকেট ফেলে চলেছে। ক্যারি আউট হওয়ার পর বাকিরা কেউই বড় রান করতে পারেননি। মিচেল স্টার্ক তাও ২৩ বলে ১২ রান করেছিলেন। এর বাইরে বাকিরা এক অঙ্কের ঘরেই হাবুডুবু খেয়েছেন।