কোন বিচারপতিকে নিয়ে শেষ কবে এত আলোচনা হয়েছে, তা মনে করতে পারছেন না প্রবীণ আইনজ্ঞরাও। বিশেষত কোনও হাইকোর্টের বিচারপতির বিষয়ে স্রেফ সাধারণ মানুষ যে দিনভর এত আলোচনা করতে পারেন বা তাঁর প্রতিটি খবরের দিকে চোখ রাখতে পারেন, তা ভাবতেও পারছেন না অনেকে। আর যে বিচারপতিকে নিয়ে দিনভর সাধারণ মানুষের সুপ্রিম কোর্ট, কলকাতা হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের দিকে নজর থাকল, সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় হাইকোর্ট থেকে বেরিয়ে আশ্বস্ত করলেন যে ‘আমি পালিয়ে যাওয়ার লোক নেই।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট যুগ যুগ জিও।'
সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্টে একাধিকবার ‘ধাক্কা’ খাওয়ার পর রাত ৯ টা ৪০ মিনিট নাগাদ হাইকোর্ট থেকে বেরিয়ে আসেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। হাইকোর্টের বাইরে চোয়ালচাপা মুখে বিচারপতি বলেন, ‘আমার মন খারাপ নয়। কারণ এই মামলা আমি তো আমার ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে শুরু করিনি। কোনও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধনের জন্যও (এই মামলা) শুরু করিনি। সুতরাং আমার কাছে (মামলা) রইল, নাকি অন্য কারও কাছে গেল, তা নিয়ে আমার বিশেষ কোনও মাথাব্যথা নেই।’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘মন খারাপ না হলেও’ পশ্চিমবঙ্গের হাজার-হাজার বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই যেন কিছুটা ভেঙে পড়েছেন। শুধুমাত্র একটি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা সরে গেলেও তাঁরা যেন ধাক্কাটা সইতে পারছেন না। তবে দিনের শেষে তাঁদের ভরসা জোগালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ওদের উদ্দেশ্যে বলব যে আপনারা অপেক্ষা করুন। মামলা তো শেষ হয়ে যায়নি। অন্য কোনও জজের কাছে গিয়েছে। তিনিও তো একজন হাইকোর্টের জজ। তিনি দেখবেন।’ সেইসঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ‘আমি যে কোনও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করব। আমি একেবারেই পদত্যাগ করছি না। আমি পালিয়ে যাওয়ার লোক নই।’
তবে শেষের দিকে যেন কিছুটা আক্ষেপ ঝরে পড়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের গলা থেকে। তিনি বলেন, ‘প্রত্য়েকেরই কাজের ধরন আলাদা। আমার কাজের ধরনে আমি কাজ করেছি। এরপর যে বিচারপতি আসবেন, তিনি নিজের কাজের ধরন মেনে কাজ করবেন। আমি যে কাজটা ৬০ বছরে করছিলাম, সেই কাজটা করতে গিয়ে যদি ৬০ বছরও লেগে যায়, তাহলেও আমার কিছু বলার নেই। সুপ্রিম কোর্টেরও কিছু বলার নেই।’
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক )