এমনিতেই রাজনৈতিক ভবিষ্যত টলমল। তার উপর নারদা কান্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ‘বন্ধু’ শোভনও। এবার দু’কুল ডুবতে দেখে, ভোলই বদলে ফেললেন শোভন ‘বান্ধবী’ বৈশাখী বন্দোপাধ্যেয়!
শোভনের গ্রেফতার হওয়ার পরক্ষণেই বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রীর স্তুতি শোনা গেল তাঁর গলায়। সোমবার শোভন চট্টোপাধ্যায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতেই ডাক পড়েছিল রত্না চট্টোপাধ্যায়েরও। সেজন্য নিজাম প্যালেসে ছুটেও যান তিনি। কিন্তু নিজাম প্যালেসের ধারেকাছেও কোথাও দেখা মেলেনি বৈশাখীর। তবে বৈশাখীর দাবি, তিনি নিজাম প্যালেসেই রয়েছেন। পরে তিনি ‘বন্ধু’ শোভনদার হয়ে মুখ খোলেন। আর শুধু মুখই খুললেন না, তাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভুরি ভুরি প্রশংসা। বললেন, ‘ শোভনের পাশে যেভাবে উনি এসে দাঁড়ালেন, ওনার জন্য আমি প্রাণ দিতেও প্রস্তুত। উনি বললে, ‘নবান্নে ওনার চটিও রেখে আসতে পারি।’ এখানেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে বিজেপিতে ভবিষ্যত অনিশ্চিত দেখেই কী, এখন তৃণমূলে ভিড়তে চাইছেন বৈশাখী!
এদিন এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে চমকে দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন মোদী সরকারের। বলেন, ‘আজ গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন, লজ্জার দিন। করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর ভারতের সরকার। সমাজের অন্যতম সম্মানের স্তম্ভ যাঁরা, তাঁদের এভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘তবে মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়ে দিলেন, উনি ক্যাপ্টেন। উনি যে সবার মুখ্যমন্ত্রী, সেটা আবার একবার প্রমাণ করলেন।’ এখানেই থেমে থাকেননি তিনি।
সরব হয়েছেন ফিরহাদের গ্রেফতারি নিয়েও। একসময় এই ফিরহাদকেই তাঁকে কলেজের অধ্যক্ষার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আক্রমণ শানিয়েছিলেন বৈশাখী। এখন শোভনের গ্রেফতারিতে তাঁর নিজের ভবিষ্যত যখন প্রশ্নের মুখে, তখন ভোল বদলে ফিরহাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বৈশাখী। ববির হয়েই তিনি বলেন, ‘আজ করোনা পরিস্থিতিতে যিনি সবচেয়ে বেশি দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেই ফিরহাদ হাকিমকে সকাল থেকে বিনা কারণে নিয়ে আসা হয়েছে। আজ পরিষেবা না পাওয়ার ফলে যে ক’টা প্রাণ যাবে, প্রত্যেকটা মৃত্যুর জন্য বিজেপি দায়ী থাকবে।’
শোভনের গ্রেফতারি নিয়েও মুখ খুলেছেন বৈশাখী। জানিয়েছেন, ভোরে কীভাবে তাঁকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যায় সিবিআই। বলেন, ‘ভোরবেলায় সিবিআই দল আসে। আমার ঘরে একজন ভদ্রলোক ঢুকলেন, পিছনে সাঁই সাঁই করে একগাদা কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢুকল। আমার সঙ্গে আমার বাচ্চা মেয়ে ছিল। একজনও মহিলা আধিকারিক ছিলেন না। আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। তারপর বুঝলাম সিবিআই। আইনি ব্যবস্থা নেব। সিবিআই যখন তখন গ্রেফতার করতে পারে, এই দম্ভ ভাঙার দিন এসেছে।’