বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার মধ্যেই দলের উপদেষ্টামণ্ডলীতে ঠাঁই হল না দুই প্রাক্তন জেলা সভাপতির। আর এটা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কারণ জেলা কমিটিতে শুধু আমন্ত্রিত সদস্য করে রেখে দেওয়া হল বর্ষীয়ান দুই নেতা গৌরীশঙ্কর দত্ত ও পুণ্ডরীকাক্ষ সাহাকে। সেই ক্ষোভ যদি প্রশমিত করা না যায়, তাহলে তা ভোটে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। গৌরীশঙ্কর দত্তের বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত তেহট্ট ১–এর ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।এদিকে দলের আর এক প্রবীণ নেতা তথা রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি শংকর সিংকে উপদেষ্টামন্ডলীতে রেখে দেওয়া হলেও বিভিন্ন ব্লক ও শহর কমিটি থেকে ছেঁটে দেওয়া হয়েছে তাঁর অনুগামীদেরকে। কুপার্স ক্যাম্প শহর সভাপতি থেকে শুরু করে তাহেরপুর, বীরনগর শহর সভাপতি পদ থেকে শংকরের অনুগামীদের ছেঁটে ফেলা হয়েছে। গয়েশপুরের সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে। এই নতুন কমিটি নিয়ে শঙ্করবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি, নতুন জেলা সভাপতি দলকে আরও গতিশীল করে তুলুন।’একমাত্র মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস ছাড়া তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের মুখ বলে পরিচিত অন্য সব নেতাদের কার্যত নির্বাসনে পাঠিয়ে দেওয়া হল। চাকদহ ব্লক সভাপতি পদে দিলীপ সরকারকে রেখে দেওয়া হলেও আমন্ত্রিত অতিথি হয়েই থেকে যেতে হল রাজ্যের আর এক মন্ত্রী রত্না ঘোষ করকে। উপদেষ্টামন্ডলীতে ঠাঁই হয়নি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডুরও। তবে উপদেষ্টামন্ডলীতে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে বর্তমান জেলা সভাপতির একমাত্র ঘনিষ্ঠ বিধায়ক হিসাবে পরিচিত পলাশিপাড়ার তাপস সাহাকে। এই নানারকম ওলট–পালট হওয়ায় অনেকে বিজেপিতে যেতে চান বলে সূত্রের খবর।হাঁসখালি ব্লককে দুটো ভাগে ভাগ করে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন মুখ। কৃষ্ণনগর শহর সভাপতি হিসেবে তুলে আনা হয়েছে শিবনাথ চৌধুরীকে। আবার রুকবানুর রহমানের প্রবল আপত্তি সত্বেও ব্লক সভাপতি পদে রেখে দেওয়া হয়েছে জেবের শেখকে। জেলা সভাপতি তথা সাংসদ মহুয়া মৈত্রের ব্যাখ্যা, সবাইকে অর্থাৎ পুরনোদের পাশাপাশি অন্য দল থেকে আসা বা তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে গিয়ে আবার তৃণমূলে ফিরে আসা নেতাদেরও কমিটিতে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। জেলা সভাপতি এই কথা বললেও পুরো বিষয়টিই প্রশান্ত কিশোরের হাতযশেই হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এখন দেখার এতে ভোটে প্রভাব পড়ে কিনা।